দর্শকনন্দিত অভিনেতা ডা. এজাজুল ইসলাম। অভিনেতার পাশাপাশি পেশায় একজন চিকিৎসকও তিনি। এজাজের জীবনের অন্যতম বিশেষ দিক হলো তার সততা এবং অর্থের প্রতি অনাগ্রহ। যে কারণে তার সুখ্যাতিও রয়েছে মানুষের কাছে। ডা. এজাজ অল্প টাকায় চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কারণে 'গরিবের ডাক্তার' বলেও পরিচিত। তিনি মনে করেন, সেবাই চিকিৎসকের প্রধান লক্ষ্য। তাই তিনি নিজের চেম্বারে মাত্র ৩০০ টাকায় রোগী দেখেন এখনো। এছাড়াও অর্থের প্রতি লোভ বা অতিরিক্ত উপার্জনের আকাঙ্ক্ষা তাকে কখনো প্রভাবিত করতে পারেনি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ডা. এজাজ বলেন, 'আমার ভিজিট এখনো তিনশ' টাকার বেশি বাড়াইনি। আমার যখন প্রোমোশন হলো, আমার স্টাফরা আমাকে বলল, আপনার জুনিয়র ডাক্তাররা আপনার চেয়ে বেশি ফিস নেয়, আপনি তো আরও বিশেষজ্ঞ। এত কম ফিস নিলে তো মানুষ সন্দেহ করবে, মান সম্মান থাকবে না! আমি বললাম, সন্দেহ করার তো কিছু নেই।' এজাজ বলেন, 'এরপর যখন ৫০০ টাকা ফিস নেওয়া শুরু করলাম, তখন আমার মনে হলো যে ওদের ৫০০ টাকা দিতে কষ্ট হচ্ছে! আমি দুদিন পর্যন্ত নিলাম। পরে স্টাফদের ডাক দিয়ে বললাম, ফিস তিনশ' টাকাই থাকবে এবং এটা আমৃতু্য।'
ডা. এজাজের মতে, টাকার পেছনে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ছুটে চলা একটি মানসিক ব্যাধি। এক সময়ের দাপুটে এই অভিনেতা বলেন, 'আমি খেতে পরতে পারি, চিকিৎসার খরচ টানতে পারি, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচটাও আলস্নাহ চালানোর সুযোগ দিয়েছেন। তো, খারাপ কি! এর চেয়ে বেশি টাকার তো আমার মনে হয় না প্রয়োজন আছে। একজন মানুষ কেন এত টাকার পেছনে ছুটবে, এত টাকার কেন তার প্রয়োজন হবে। আমি মনে করি অকারণে টাকা উপার্জন করাটা একটা মানসিক রোগ।'
উলেস্নখ্য, এজাজুল ইসলাম একজন বাংলাদেশি নাট্য ও চলচ্চিত্র অভিনেতা। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মাধ্যমে তার নাটকে আগমন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র 'শ্রাবণ মেঘের দিন'। এরপর তিনি 'দুই দুয়ারী', 'চন্দ্রকথা', 'শ্যামল ছায়া' চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি 'তারকাঁটা' চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ৩৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতার পুরস্কারে ভূষিত হন।
বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এজাজুল ইসলাম- যা তার কর্মজীবনে একটি নতুন মাইলফলক।