শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে

'এ যাবত সবচেয়ে ভয়ংকর' সংক্রমণ ক্ষমতা ডেলটার চেয়েও বেশি তিন দেশ নিয়ে সতর্ক ভারত
যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা নতুন প্রজাতির ভাইরাস নিয়ে 'গভীরভাবে উদ্বিগ্ন'। একজন বিশেষজ্ঞ করোনার ভ্যারিয়েন্টকে 'এ যাবত সবচেয়ে ভয়ংকর' বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে ডবিস্নউএইচও। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ডয়চে ভেলে।

নতুন এই ভেরিয়েন্টটি হলো বি.১.১.৫২৯। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেটা ধারণা করা হচ্ছিল, তার চেয়ে দ্রম্নত ছড়ায় এই ভ্যারিয়েন্ট। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার সেন্টার ফর এপিডেমিক রেসপন্স অ্যান্ড ইনোভেশনের পরিচালক টুলিও ডি অলিভেরিয়া বলেন, তিনি এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ভীত ছিলেন। এরপর গত সপ্তাহে তিনি এ নিয়ে ডবিস্নউএইচওর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ডবিস্নউএইচও এ নিয়ে শুক্রবার জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি ধারণা করছেন, দেশটির জোহানেসবার্গসহ গৌতেং এলাকায় নতুন যেসব করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে, তার ৯০ শতাংশ এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন যে ভ্যারিয়েন্টই শনাক্ত হচ্ছে সেটারই সংক্রমণ ক্ষমতা ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি। ফলে করোনার মহামারি ইতি টানার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে এসব ভ্যারিয়েন্ট।

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছে, করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২২ জন। করোনার এই ধরনে সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ৫৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সবাই দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা ও হংকংয়ের বাসিন্দা।

একজন বিশেষজ্ঞ করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টকে 'এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর' বলে আখ্যায়িত করেছেন। এমনকি করোনার এই ধরন মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এজেন্সি জানিয়েছে, এই নতুন প্রজাতির ভাইরাসের মধ্যে যে স্পাইক প্রোটিন আছে, তা অন্য করোনাভাইরাসের থেকে একেবারেই আলাদা। তাদের দাবি, আজ পর্যন্ত যত ধরনের করোনাভাইরাস এসেছে, এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ্যারিয়েন্ট। এই ভাইরাস কতটা ভয়ংকর, এটি রুখতে ভ্যাকসিন কাজ করবে কি না, কতটা দ্রম্নত তা ছড়ায় সবই গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখছেন।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই ভ্যারিয়েন্ট আরও দ্রম্নত ছড়ায়। আর এখন যে ভ্যাকসিন চালু আছে, তা এর বিরুদ্ধে খুব বেশি কার্যকর হবে না।

যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানাসহ মোট ছয়টি দেশে যাতায়াতের ওপর কড়াকড়ি চালু করেছে। এ ছাড়া এসব দেশ থেকে যুক্তরাজ্যমুখী ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে। অবশ্য যুক্তরাজ্যে এখনো ভাইরাসের এই ধরনে আক্রান্ত কেউ শনাক্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার সে দেশটি জানিয়েছে, ভাইরাসের নতুন রূপ নিয়ে তারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া বিদ্যমান করোনা টিকা ভাইরাসের এই ধরনকে কতটা থামাতে পারবে সেটি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

তিন দেশ নিয়ে সতর্ক ভারত : এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা ও হংকংয়ে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের খোঁজ মিলেছে। আর এ নিয়ে ভারতের সব রাজ্যকে সতর্ক করেছে দেশটির কেন্দ্র সরকার।

বৃহস্পতিবার এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, যেসব যাত্রী ওই তিন দেশ থেকে আসবেন, তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। জোর দিতে হবে নজরদারি ও পরীক্ষায়। তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের বিষয়েও সতর্কতা বজায় রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার ভারতের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য সচিবদের লেখা চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন ধরনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ছয়জন। বতসোয়ানা ও হংকংয়ে আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে তিন ও এক। এ অবস্থায় ওই তিন দেশ থেকে যেসব যাত্রী আসবেন, তাদের ওপর কড়া নজরদারি চালাতে হবে। করতে হবে পরীক্ষা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে