শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বিএনপি নির্বাচনে এলে তফসিল পেছাবে ইসি

আমাদের প্রতি আস্থা রাখুন। আসুন, নির্বাচন করুন। নিঃসন্দেহে আপনারা একটা ভালো, সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। ভোটাররা এসে স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের যাকে ইচ্ছা তাকে মনোনয়ন করবেন। নিশ্চয় আমরা লেভেল পেস্নয়িং ফিল্ড তৈরি করব।
যাযাদি রিপোর্ট
  ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
বিএনপি নির্বাচনে এলে তফসিল পেছাবে ইসি

বিএনপিসহ যেসব দল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনে রয়েছে, তারা মত পাল্টে ভোটে আসতে চাইলে এবং সেই আগ্রহের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল পেছাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।

রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে ইসি রাশেদা বলেন, 'আমাদের প্রতি আস্থা রাখুন। আসুন, নির্বাচন করুন। নিঃসন্দেহে আপনারা একটা ভালো, সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। ভোটাররা এসে স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের যাকে ইচ্ছা তাকে মনোনয়ন করবেন। নিশ্চয় আমরা লেভেল পেস্নয়িং ফিল্ড তৈরি করব।'

বিএনপিসহ নির্বাচনে অনাগ্রহী দলগুলো এখনও যদি আসতে চায়, তাহলে তাদের জন্য স্পেস তৈরি করে দেবেন বলেও জানান এই কমিশনার। তিনি বলেন, 'যারা ভোটে আসতে চাইছেন না, তারা যদি আসার ইচ্ছা ফরমালি জানান; আলোচনা করে স্পেস তৈরি করা হবে।'

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নিশ্চয়ই আমরা আলোচনা করব, সিদ্ধান্ত নেব। উনারা সিদ্ধান্ত নিলে, আসতে চাইলে অবশ্যই আমরা ওয়েলকাম করব। কখনোই চাইব না যে উনারা আসতে চেয়েছেন, আর আমরা ফিরিয়ে দেব; এটা হবে না।'

ভোটে ফিরতে চাইলে এ তফসিলে বিএনপির জন্য কী বিবেচনা থাকবে- এই প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা বলেন, 'দেখেন, তারা যদি ফিরতে চান, আমার জানামতে আগেরবারও উনারা একটু পরেই এসেছিলেন এবং সুযোগটা পেয়েছিলেন। উনারা যদি ফিরতে চান, কীভাবে কী করা যাবে, নিশ্চয়ই আমরা আলোচনা করব, সিদ্ধান্ত নেব। উনারা সিদ্ধান্ত নিলে, (নির্বাচনে) আসতে চাইলে অবশ্যই আমরা ওয়েলকাম করব।'

এখনই বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'উনারা যদি আসেন, আমরা কমিশনাররা বসব। আইন-কানুন দেখব। তারপর যেটা সিদ্ধান্ত হয়। অগ্রিম কিছু বলতে পারব না। এলে তো বিবেচনা করবই। অবশ্যই করব। আমরা তো চাই সব দল এসে একটা সুন্দর নির্বাচন হোক।'

২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে রাশেদা সুলতানা জানান, 'ওই নির্বাচনে কিন্তু উনাদের জন্য একটু স্পেস তৈরি করা হয়েছিল। যেভাবে আইনে আছে, সেভাবেই করা হবে। তবে আমি ডিটেইল আর কিছু বলব না। ...উনারা আসলে আমরা ওয়েলকাম করব। এটার জন্য উনাদের জন্য আইন অনুযায়ী যেভাবে পথ সৃষ্টি করতে হবে সেভাবে করব। কিন্তু আগেই বলব না।'

রিটার্ন দাখিলের শেষ দিনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন থাকায় পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছে জাতীয় পার্টি। এ প্রসঙ্গে রাশেদা সুলতানা বলেন, 'এই বিষয়টাতে আমরা কিছুই বলব না। অগ্রিম বলার সময় এখনও আসেনি। যখন আসবে, যেটা হবে সেটাই বলব। পরিস্থিতি যখন আসবে, পরিস্থিতি দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। অগ্রিম এ বিষয়ে কোনো কথাই বলব না, বলা উচিত না।'

তিনি বলেন, 'যদি সময় বাড়ানোর প্রয়োজন হয়, বাড়ানো হবে। যদি এমনিই হয়ে যায়, তাহলে হবে। কোনো অসুবিধা নাই। যদি এই তফসিলের মধ্যেই আসেন, তাহলে তো তফসিলে হাত দেওয়ার দরকার নেই।'

এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'নিশ্চয়ই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের এখনও স্পেস আছে। মাঠে রাজনীতিতে যখন বিভাজন তৈরি হয়েছে, তখন শান্ত নাকি অশান্ত তা আমার বলতে হবে না। আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন। জনগণও দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু অশান্ত আছে, তাই বলে শান্ত হবে না এমন কোনো কথা না। যে কোনো মুহূর্তে শান্ত হতে পারে।'

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বৃহস্পতিবার ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ

তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। তার তিন সপ্তাহ পর হবে ভোট গ্রহণ।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়েছে এবং প্রচারের জন্য ১৯ দিন সময় রয়েছে। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ করতে হয়। অর্থাৎ, ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ থাকবে। অন্যদিকে সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে সারা দেশে হরতাল কর্মসূচি পালন করছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে