আরও একবার নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিল আফগানিস্তান। টি২০ বিশ্বকাপের গ্রম্নপ পর্বে নিউজিল্যান্ডকে ছিটকে দেওয়ার পর সুপার এইটে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল রশিদরা।
সেমিফাইনালে যেতে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ১৪৯ রানের সমীকরণ সহজ ছিল। জিতলেই সেমিফাইনাল। তাদের জয়ে ভারতও শেষ চারে উঠে যেত। তবে বাঁচা-মরার ম্যাচ হতাশার পরাজয়কে সঙ্গী করল অজিরা। সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্ন মজবুত করল আফগানিস্তান।
রোববার আর্নস ভ্যালে স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে
৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রান করে আফগানিস্তান। জবাবে আফগানদের বোলিং তোপে ১৯ দশমিক ২ ওভারে ১২৭ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেমিফাইনালের বড় মঞ্চে উঠার হাইভোল্টেজ ম্যাচে অজিদের ২১ রানে হারিয়ে লড়াই জমিয়ে তুলেছে আফগানরা।
এদিকে টানা ২ হারের পরও সেমিফাইনালে যেতে পারে বাংলাদেশ। এজন্য ছোট দুটি সমীকরণ মেলাতে হবে টাইগারদের। শান্ত বাহিনীকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিতে হবে। রশিদ খানের দলকে হারানোর পাশাপাশি ভারতের জয়ের জন্যও প্রার্থনা করতে হবে। অজিদের হার এবং নেট রানরেটে এগিয়ে থাকলেই সেমির টিকিট পাবে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
এদিন সুপার ফোরের লক্ষ্যে টস জিতে আফগানদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় অজিরা। তবে দুই আফগান ওপেনারের ১১৮ রানের দুর্দান্ত জুটিতে ভুল প্রমাণিত হয় সাবেক চ্যাম্পিয়নদের সিদ্ধান্ত।
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সমান ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৪৯ বলে ৬০ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রহমানুলস্নাহ গুরবাজ। অন্যপ্রান্তে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৮ বলে ৫১ রানের সাজঘরের পথ ধরেন ইব্রাহিম জাদরান। তবে ওপেনিংয়ে শতরানের জুটির পর বাকিরা দায়িত্ব নিয়ে দলীয় পুঁজি এগিয়ে নিতে পারেননি। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯ বলে ১৩ রান করেন করিম জানাত। আর নবির ব্যাট থেকে আসে ১০ রান। বাকিরা কেউই দুই অঙ্কের কোটা ছুঁতে পারেননি।
অজিদের হয়ে ২৮ রান খরচায় হ্যাটট্রিক করেন প্যাট কামিন্স। এর আগে সুপার এইটে বাংলাদেশের বিপক্ষেও এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি। এছাড়া দুটি উইকেট শিকার করেন অ্যাডাম জাম্পা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় অজিরা। নাভিন-উল-হকের বলে বোল্ড হয়ে রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ট্র্যাভিস হেড। এরপর তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে মিচেল মার্শকে ফেরান তিনি। মিডঅফে নবির হাতে মুঠোবন্দি হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। এরপর উইকেটে এসে একপ্রান্ত আগলে রাখেন গেস্নন ম্যাক্সওয়েল। তবে অন্যপ্রান্তে একের পর এক উইকেট তুলে নেয় আফগানরা। শেষ পর্যন্ত ৪১ বলে ৫৯ রানে ম্যাক্সওয়েল ফিরলে বাকিদের ব্যর্থতায় ১২৭ রানেই থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। এতে প্রথমবারের মতো টি২০ বিশ্বকাপে অজিদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নেয় রশিদ খানের দল।
আফগানদের হয়ে ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন গুলবাদিন। এ ছাড়া নাভিন-উল-হক তিনটি এবং রশিদ খান, ওমরজাই ও মোহাম্মদ নবির শিকার একটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৪৮/৬ (গুরবাজ ৬০, ইব্রাহিম ৫১, ওমারজাই ২, জানাত ১৩, রশিদ ২, নাবি ১০*, গুলবাদিন ০, নানগেলিয়া ১*; অ্যাগার ০/১৭, হেইজেলউড ০/৩৯, কামিন্স ৩/২৮, জ্যাম্পা ২/২৮, ম্যাক্সওয়েল ০/১২, স্টয়নিস ১/১৯)।
অস্ট্রেলিয়া:১৯.২ ওভারে ১২৭ (হেড ০, ওয়ার্নার ৩, মার্শ ১২ ম্যাক্সওয়েল ৫৯, স্টয়নিস ১১, ডেভিড ২, ওয়েড ৫, কামিন্স ৩, অ্যাগার ২, জ্যাম্পা ৯, হেইজেলউড ৫*; নাভিন ৩/২০, ফারুকি ০/২১, ওমারজাই ১/৯, নবি ১/১, নানগেলিয়া ০/১৩, রাশিদ ১/২৩, নুর ০/১১, গুলবাদিন ৪/২০)।
ফল: আফগানিস্তান ২১ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: গুলবাদিন নাইব