বহুল আলোচিত জলস্নাদ শাহজাহান (৭৪) মৃতু্যবরণ করেছেন। সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় তিনি ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতু্যবরণ করেন। তার পুরো নাম শাহজাহান ভূইয়া, তিনি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের হাছেন আলীর ছেলে। তার লাশ ঢাকা থেকে আনার পর নরসিংদীর বাড়িতেই দাফন করার কথা রয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও জোনের শের-এ-বাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক মশিউর আজম জানান, সাভারের হেমায়েতপুরের জাদুরচর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন শাহজাহান। রোববার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বুকে ব্যথা শুরু হলে তাকে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোর ৫-৩০ মিনিটে তার মৃতু্য হয়। হাসপাতাল থেকে মরদেহ গ্রহণ করেন শাহজাহানের বোন ফিরোজা বেগম। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে দাফন করা হবে।
দীর্ঘ ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন কারাভোগের পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন দুপুরে কারাগার থেকে মুক্তি পান শাহজাহান। ডাকাতি করতে গিয়ে হত্যা ও অস্ত্র আইনের দুই মামলায় তার ৪২ বছরের কারাদন্ড হয়েছিল। কিন্তু কারাগারে জলস্নাদের কাজ, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন আর ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবে তিনি ১০ বছর পাঁচ মাস ২৮ দিন রেয়াত (সাজা মওকুফ) পান। ওই দুই মামলায় তার পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা হয়। মুক্তির সময় কারা কর্তৃপক্ষ তা পরিশোধ করে দেয়।
কারাগারের নথি অনুযায়ী, 'জলস্নাদ' শাহজাহান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় ঘাতক বজলুল হুদা, মুহিউদ্দিন, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মহিউদ্দিন আহমেদ, আবদুল মাজেদ), চার যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোলস্না, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মীর কাসেম আলী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি খুকু মনির এবং ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ আলোচিত ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেন।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল ৫টা পর্যন্ত) শাহজাহানের লাশ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছেনি।