জাতীয় পার্টির রাজধানীর কাকরাইল কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় 'পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অপতৎপরতা ও দেশবিরোধী চক্রান্তের প্রতিবাদে' ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে একদল লোক একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে যায়। সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এই ঘটনার পর ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুলস্নাহ জাতীয় পার্টিকে উদ্দেশ করে ফেসবুকে লেখেন, 'এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।'
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে খবর পেয়ে সেখানে আগুন নেভানোর জন্য দুই ইউনিট পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক জানান, তারা আগামী শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশ করতে পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছেন। আজ (বৃহস্পতিবার) জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যার পরে শাহবাগ থেকে একটি মশাল মিছিল নিয়ে একদল লোক কার্যালয়ে হামলা করে।
মুজিবুল হক বলেন, 'কর্মীদের প্রতিরোধে হামলাকারীরা মার খেয়ে পালিয়ে যায়। আধাঘণ্টা পর সংঘবদ্ধ হয়ে ফিরে এসে তারা কার্যালয়ে আগুন দেয়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস এসেছিল। তাদের আগুন নেভাতে দেওয়া হয়নি।'
তিনি বলেন, 'এভাবে যদি একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে হামলা হয়, তাহলে দেশে কীসের গণতন্ত্র, কীসের রাজনীতি!'
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার কিছুক্ষণের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র
আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুলস্নাহ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে লেখেন, 'জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।'
রাত ৮টা ৩০ মিনিটে সেই পোস্ট এডিট করে তিনি লেখেন, 'রাজু ভাস্কর্য থেকে ৮.৩০-এ মিছিল নিয়ে আমরা বিজয়নগরে মুভ করব। জাতীয় বেইমানদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে।'
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা সারজিস আলম সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে একই রকম একটি পোস্ট দেন। তিনি লিখেছেন, 'রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে আমরা বিজয়নগরে যাচ্ছি।'
জানা যায়, ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মশাল মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোলস্না। সেই মিছিলটি শাহবাগ হয়ে বিজয়নগরে যায়।
গণঅধিকার পরিষদের (নুরুল হক নুরের দল) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, 'শাহবাগে সমাবেশ শেষ করে আমরা বিজয়নগরে আসি। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।'
এ রিপোর্ট লেখার আগে (রাত ৮টায়) রমনা বিভাগের এডিসি জুয়েল রানা বলেন, 'আমরা এখানেই আছি। ছাত্র-জনতা এসে জাতীয় পার্টির অফিসে আগুন দিয়েছে। এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এখানে এখনো অনেক ছাত্র-জনতা ভিড় করে রয়েছে। এখানে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আমরা এখানে আছি।'