মধ্যরাতে 'মব' তৈরি করে গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর বাসায় ঢুকে তলস্নাশির নামে মালামাল তছনছ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পেছনে ওই ভবনের সাবেক তত্ত্বাবধায়কের হাত রয়েছে। শাকিল আহমেদ নামের ওই ব্যক্তি লোক জড়ো করেন এবং বাসাটিতে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে, এমন তথ্য দিয়ে সেখানে তলস্নাশি চালাতে উসকানি দেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতের এ ঘটনায় ভবনের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক শাকিল আহমেদ (২৮) ছাড়াও জুয়েল খন্দকার (৪৮) ও তার ছেলে শাকিল খন্দকার (২৪) নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তানভীর ইমাম সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি)। তিনি ক্ষমতাচু্যত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমামের ছেলে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শতাধিক মানুষ গুলশান-২ নম্বরের ৮১ নম্বর সড়কের একটি ভবন ঘেরাও করে বলতে থাকেন, সেখানে তানভীর ইমামের কয়েক শ' কোটি টাকা রাখা আছে। তারা রাত ১২টার পর ওই ভবনে ঢুকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে একটি বাসায় তলস্নাশি চালিয়ে তছনছ করেন।
বিষয়টি নিয়ে আজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে, গুলশানের ওই বাসায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ, অস্ত্র ও আওয়ামী লীগের দোসরদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যরাতে 'তলস্নাশির' নামে ২০ থেকে ২৫ জন লোক দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে পড়েন। তাঁরা তলস্নাশির অজুহাতে বাসায় ঢুকে মালামাল তছনছ, ভাঙচুর ও লুটপাটের চেষ্টা করেন।
জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গুলশান জোনের পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে শাকিল খন্দকার, জুয়েল খন্দকার ও শাকিল আহমেদ নামের তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
প্রেস উইং থেকে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে শাকিল আহমেদ একসময় ওই বাসায় কেয়ারটেকারের (তত্ত্বাবধায়ক) কাজ করতেন। তিনিই মূলত জনতাকে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে, এমন তথ?্য দিয়ে বাসায় তলস্নাশি চালাতে উসকানি দেন।
প্রেস উইং থেকে আরও বলা হয়, এর আগে গত পরশু রাত সাড়ে ১০টার দিকেও একই অজুহাতে একদল জনতা বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ এসে তাঁদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মর্মে আবারও সতর্ক করছে যে কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়। কোথাও কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে যেন সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী থানাকে জানায়। সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে বদ্ধপরিকর।##