সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

সুস্থ খাদ্যাভ্যাসে সুস্থ জীবন

সপ্তাহে অন্তত ১ দিন ১ ঘণ্টা জগিং ৬ বছর পর্যন্ত আয়ু বাড়ায়। তারা বলেন, জগিং-এর সময় অক্সিজেন গ্রহণের পরিমাণ বাড়ে, যা উচ্চ রক্তচাপ কমায়। আর অক্সিজেন শরীরের রক্তের সঙ্গে মিশে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এতে হৃদপিন্ড সহজেই রক্ত পাম্প করে পুরো দেহকে সতেজ রাখে। সুতরাং রক্তচাপ কমাতে জগিং করুন। যারা জগিং করতে পারেন না তারা দ্রম্নত হাঁটার অভ্যাস করুন। ডাক্তারদের মতে দ্রম্নত হাঁটা অনেকাংশে জগিং-এর মতই কার্যকরী
সুস্বাস্থ্য ডেস্ক
  ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
সুস্থ খাদ্যাভ্যাসে সুস্থ জীবন
সুস্থ খাদ্যাভ্যাসে সুস্থ জীবন

প্রত্যেকের বয়স, উচ্চতা, লিঙ্গ অনুযায়ী ডায়েট চার্ট দেখে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই খাওয়া উচিত। প্রতিটি খাদ্যের খাদ্যশক্তি বা খাদ্যমূল্যও তাই জানা উচিত। কেউ যদি প্রতিদিন প্রয়োজনের তুলনায় ১০০ ক্যালরি বেশি গ্রহণ করেন, তবে বছরে সাড়ে চার কেজি ওজন বৃদ্ধি পাবে।

সুস্থ খাদ্যাভ্যাস বলতে বোঝায় :

* বেশি করে টাটকা ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া

* চর্বিবিহীন বা কম চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ

* চিনি এবং লবণে সতর্ক থাকা

* রান্নায় সুস্থ পদ্ধতি অর্থাৎ স্টামির, বয়েলিং, গ্রিলিং এবং বেকিং পদ্ধতি বেছে নেওয়া

* প্রতিদিন পরিমাণমতো পানি গ্রহণ।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন :

* প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন যা আপনার হৃদরোগের ঝুঁঁকি কমাবে এবং উচ্চ রক্তচাপও কমাবে।

* শিশুদের প্রতিদিন এক ঘণ্টা শারীরিক কার্যক্রম প্রয়োজন।

* পরিবারে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করুন যাতে ব্যায়াম আপনার দৈনন্দিন কার্যক্রম থেকে বাদ না যায়।

* পরিবারের সবাই মিলে টেলিভিশন দেখা কমিয়ে দিয়ে সবাই মিলে খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টি করুন অথবা এমন কাজ করুন যাতে কায়িক পরিশ্রম হয়। যেমন-নিজের বাগানে কাজ করতে পারেন অথবা বাস স্ট্যান্ডে হেঁটে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস করা। অফিসে বা বাড়িতে লিফটের পরিবর্তে হেঁটে উঠার অভ্যাস করা।

এনার্জি ব্যালান্স :

শরীরের অতিরিক্ত ওজনের কারণ হচ্ছে ক্যালরি ব্যয়ের তুলনায় বেশি পরিমাণ খাদ্য ক্যালরি গ্রহণ করা। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন ক্যালরি ব্যয় এবং ক্যালরি গ্রহণের ভারসাম্য বজায় অর্থাৎ এনার্জি ব্যালান্স। এজন্য ব্যালান্সড ডায়েট এবং নিয়মিত ব্যায়ামের বিকল্প নেই। চর্বিযুক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলুন এবং বেশি করে আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।

ঔষধ ছাড়াই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন ৫টি উপায়ে :

ইদানীং অনেক মানুষকেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। কিছুদিন আগেও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা শুধু বয়স্কদের রোগ হিসেবে ধরা হতো। কিন্তু বর্তমানে অনেক কম বয়সি মানুষও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। গবেষণায় পাওয়া যায় উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ১০ জন ব্যক্তির মধ্যে ৭ জনেরই স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক ঝুঁঁকি বেশি থাকে।

ক্রমাগত বসে কাজ করা, ব্যায়ামের অভাব, অতিরিক্ত চিন্তা করা এবং লবণাক্ত খাবার খাওয়া উচ্চ রক্তচাপের কারণ হিসেবে ধরা হয়। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে না রাখলে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। চিন্তা করবেন না। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার অনেক সহজ কিছু উপায় আছে। এই উপায়গুলো আপনাকে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

সপ্তাহে অন্তত ১ দিন জগিং করুন :

কোপেনহেগেন সিটি হার্ট কার্ডিওভেস্কু্যলার প্রায় ২০,০০০ নারী-পুরুষের ওপর একটি গবেষণা করে দেখতে পান যে, সপ্তাহে অন্তত ১ দিন ১ ঘণ্টা জগিং ৬ বছর পর্যন্ত আয়ু বাড়ায়। তারা বলেন, জগিং-এর সময় অক্সিজেন গ্রহণের পরিমাণ বাড়ে, যা উচ্চ রক্তচাপ কমায়। আর অক্সিজেন শরীরের রক্তের সঙ্গে মিশে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এতে হৃদপিন্ড সহজেই রক্ত পাম্প করে পুরো দেহকে সতেজ রাখে। সুতরাং রক্তচাপ কমাতে জগিং করুন। যারা জগিং করতে পারেন না তারা দ্রম্নত হাঁটার অভ্যাস করুন। ডাক্তারদের মতে দ্রম্নত হাঁটা অনেকাংশে জগিং-এর মতই কার্যকরী।

প্রতিদিনের খাবার তালিকায় দই রাখুন :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপস্থাপিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিদিন এক কাপ পরিমাণ চিনি ছাড়া বা অল্প চিনিযুক্ত দই উচ্চ রক্তচাপ প্র্রায় এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে দেয়। দইয়ের ক্যালসিয়াম ধমনীকে নমনীয় ও প্রসারিত করে। এতে করে রক্ত কোনো প্রকার বাঁধা ও চাপ ছাড়াই পুরো দেহে সঞ্চালিত হতে পারে। এতে করে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমে যায়।

সপ্তাহে ৫টি কলা খান

সপ্তাহে ৫টি কলা উচ্চ রক্তচাপের কারণে মৃতু্য ঝুঁকি কমায়। কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, যা দেহের লবণের পরিমাণ ঠিক রাখে। এতে করে রক্তচাপ কমে। অনলাইনে প্রকাশিত ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের একটি নতুন গবেষণা অনুযায়ী কলার পটাসিয়াম শরীরে তরল পদার্থের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

লবণ খাবেন না

লবণ আপনার ধমনীতে বিদ্যমান তরলের সঙ্গে মিশে গিয়ে তরলের আয়তন বৃদ্ধি করে। এতে করে রক্ত সঞ্চালিত হওয়ার সময় ধমনীতে চাপ পরে। ফলশ্রম্নতিতে রক্তচাপ বাড়ে। যতটা সম্ভব লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

ধূমপান করবেন না

ধূমপান উচ্চ রক্তচাপের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সিগারেটের নিকোটিন দেহে প্রবেশ করে রক্তে মিশে গিয়ে অ্যাড্রেনালাইন (বিক্করস) উৎপন্ন করে। এই রসটি হার্ট বিটকে দ্রম্নততর করে ফেলে। যার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এছাড়া নিকোটিন রক্তে মিশে ধমনীকে আড়ষ্ট করে। যার ফলে রক্ত সঞ্চালনে বাঁধা পাওয়া যায় ও ধমনীতে চাপ পরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। সুতরাং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে চাইলে ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে