বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

আটঘরিয়ায় খেজুরের রস সংগ্রহে গাছিদের ব্যস্ততা

বদলগাছীতে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস
আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
  ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
আটঘরিয়ায় খেজুরের রস সংগ্রহে গাছিদের ব্যস্ততা
নওগাঁর বদলগাছীতে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করছেন গাছি -যাযাদি

শীত মওসুমে খেজুরের রস ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা। আটঘরিয়া এলাকার খেজুর গাছে প্রতিদিন রস বের করে গুড় ও পাটালি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রায় ৫০ জন গাছি।

এই এলাকায় খেজুর গাছ থাকলেও গাছি না থাকায় নাটোরের লালপুর উপজেলা এলাকা থেকে প্রতি বছরের মতো এবার প্রায় ৫০ জন গাছি এসে বিভিন্ন স্থানে ক্যাম্প করে খেজুর গাছে হাঁড়ি লাগিয়ে রস সংগ্রহ ও পাটালি গুড় তৈরি করে চলেছে। এসব পাটালি দুইভাবে তৈরি করা হয় বলে স্বীকার করে গাছিরা।

রাধাকান্তপুর ক্যাম্পের মালিক ইন্তাজ আলী জানান, চিনি মিশিয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পাটালি গুড়। অন্যদিকে নির্ভেজাল খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে বেশি দামের পাটালী গুড়। চিনি মিশ্রিত পাটালী গুড় ১০০ টাকা কেজি এবং অনেকটা ভালো মানের পাটালী গুড় ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। গাছিরা ৮/১০ জনের গ্রম্নপ করে বিভিন্ন গ্রামে ডেরা তৈরি করে বসবাস করে কাজ করে এবং মওসুম শেষ হলে যার যার বাড়ি চলে যায়। এছাড়াও এলাকার ২/১ জন সৌখিন লোক ২/৪টি গাছে রস বের করে ১০ টাকা কেজিতে প্রতিদিন খোলা বাজারে রস বিক্রি করে থাকে।

এদিকে বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, নওগাঁর বদলগাছীতে শিশির ভেজা ঘাসের ডগায় মৃদুমন্দ ঠান্ডা হাওয়ায় এমনকি কুয়াশার রাত শেষে জ্যোৎস্নার ঝলকানিতে প্রচন্ড শীত যখন প্রকৃতিকে কাঁপিয়ে চলছে ঠিক এমন সময়ের পাওয়া যাচ্ছে না গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের খেজুর রস। সময়ের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ। বিগত দিনে শীতের মৌসুমে এলে গাছিরা গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে রস আহরণের জন্য অগনিত খেজুর গাছ চেঁছে পাইল করতেন। পাইল করার কয়েকদিন পরে আবার পাইল দিয়ে গাছে হাঁড়ি পাতার ব্যবস্থা করতেন। গাছে হাঁড়ি উঠলেই শুরু হতো পিঠা, গুড় আর পায়েস খাওয়ার উৎসব। সেসব দৃশ্য এখন তেমন একটা চোখে পড়ে না বললেই চলে। এ মৌসুমে অনেক পরিবার তাদের জীবিকা নির্বাহ করত খেজুর রস বিক্রির মাধ্যমে।

এ সময় দেখা যেত কাঁচা রাস্তার দুই পাশে সারি সারি খেজুর গাছ। গাছে দেখা যেত ঢেউয়ের মতোন খাঁজকাটা। বিকাল হলেই দেখা যেত গাছির মাথায় রস সংগ্রহের হাড়ি। সে দারুণ দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ার পেছনে বিবিধ কারণ। অভিঙ্গ মহর মনে করছেন ইট ভাটায় বেশিরভাগ খেজুর গাছ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। কম খরচে গৃহনির্মাণের জন্য খেজুর গাছ ব্যবহার করায় গাছের সংখ্যা কমেছে।

যার ফলে এখন আর দেখা মেনে না শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে পাড়ার বাজারে, গলির মোড়ে গাছিদের রসের হাঁড়ির পসরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে