শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষার আগমনী বার্তায় বেড়েছে চাঁই বিক্রি

ম দাউদকান্দি (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
  ১৮ মে ২০২২, ০০:০০

বর্ষার আগমনী বার্তার শুরুতেই রিমঝিম বৃষ্টি, দিন-রাত অঝোরে ঝরতে থাকে আকাশ থেকে পানি। আষাঢ়-শ্রাবণ এ দুই মাস বর্ষাকাল হলেও মূলত আমাদের দেশে প্রায় ৩ মাসের অধিক থাকে বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষি জমিতে বর্ষার পানি। এ সময় নদী, নালা, খাল-বিল ও পুকুর-ডোবা ফিরে পায় তার পূর্ণ যৌবন। কুমিলস্নার দাউদকান্দি-তিতাস ও মেঘনায় বৃষ্টির আগমনীতে বিভিন্ন হাট-বাজারে দেশি প্রজাতির ছোট-বড় জাতের মাছ ধরার প্রাচীনতম উপকরণ বাঁশের তৈরি চাঁই ও গৃহস্থালী কাজে প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি চলছে। এ কয়েকটি উপজেলার প্রতি হাটের দিন বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে বাঁশের তৈরি চাঁই।

উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গৌরীপুর-ইলিয়টগঞ্জ, বাতাকান্দি-দাউদকান্দি বাজারসহ চাঁই পট্টিতে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড়। বিভিন্ন গ্রামের ঋষি সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের সব সদস্য মিলে নিপুণ হাতে তৈরি করেন চাঁই। সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা উপজেলার মানিকারচর বাজার, দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজার ও ইলিয়টগঞ্জ বাজারে বিক্রির জন্য পশরা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। বাঁশ, চটের সুতা এবং তাল গাছের আঁশ দিয়ে সেলাই করা এসব চাঁই। আর এসব চাঁই মানের দিক দিয়ে ভালো হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান। ফলে এ পেশায় জড়িত পরিবারগুলো বর্ষা মৌসুমে চাঁই বিক্রি করে পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটায়। লাভ খুব বেশি না হলেও বর্ষা মৌসুমে এর চাহিদা থাকায় রাত-দিন পরিশ্রমের মাধ্যমে চাঁই তৈরি করেন তারা। এসব চাঁই তৈরিতে প্রকার ভেদে খরচ হয় ১৫০ টাকা থেকে দুইশ' টাকা, বিক্রি হয় চারশ' থেকে পাঁচশ' টাকা পর্যন্ত। এতে করে খুব বেশি লাভ না হলেও পৈত্রিক এ পেশা ছাড়তে নারাজ তারা।

আধুনিকতার উৎকর্ষে জালের দাপটে দেশি প্রযুক্তির বাঁশের তৈরি চাঁই সামগ্রী এমনিতেই টিকে থাকতে পারছে না। উপজেলার স্থানীয় ঠেঁটালিয়া গ্রামের প্রায় দুইশত পরিবার চাঁই বিক্রি করে তাদের জীবন নির্বাহ করছেন। এই গ্রামের প্রায় সব পরিবার ওই চাঁইসহ মাছ ধরার জাল বিক্রি করে তাদের জীবন নির্বাহ করে আসছেন। এই শিল্পটি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে