দেশের প্রথম জেলা হিসেবে পঞ্চগড় ডিজিটাল লেনদেন হিসেবে ক্যাশলেস যুগে প্রবেশ করল। এ সেবা চালুর মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশে যুক্ত হলো পঞ্চগড়। এখন থেকে ইউনিয়নের নাগরিকরা ইউনিয়ন পরিষদের ২০টি সেবা অতি সহজে গ্রহণ করতে পারবেন। তেঁতুলিয়া উপজেলায় শুরুর পর গত মঙ্গলবার সকাল থেকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে এই সেবা।
ইউনিয়ন পরিষদে ট্রেড লাইসেন্স, চারিত্রিক সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ভূমিহীন সনদ, ওয়ারিশান সনদ, উত্তরাধিকার সনদ, অবিবাহিত সনদ, বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়নপত্র, অর্থিক অসচ্ছলতার প্রত্যয়ন, বিভিন্ন লাইসেন্সের মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স, অগভীর নলকূপ স্থাপন লাইসেন্স, অযান্ত্রিক যানবাহনের (রিকশা, ভ্যান এবং বাইসাইকেল) লাইসেন্স প্রদানসহ নানাবিধ নাগরিক সেবা প্রদান করে থাকে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কর (হোল্ডিং ট্যাক্স, রপ্তানি কর, পেশাবৃত্তি কর ইত্যাদি) আদায় করে থাকে। এসব সেবা নিতে সেবাগ্রহীতারা এখন থেকে তাদের মোবাইল থেকে নগদ-বিকাশ-এর মতো ক্যাশলেসের মাধ্যমে ফি পেমেন্ট করে সেবা নিতে পারবেন।
উদ্যোগটির সম্পর্কে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের প্রদত্ত সেবাগুলো সচিব বা হিসাব সহকারীরা যে কোনো কম্পিউটারে মনগড়াভাবে প্রস্তুুত করে অফিস স্মারক ব্যতীত সেবা প্রদান করতেন। এতে ইউনিয়ন পরিষদ সেবা গ্রহীতার কাছ থেকে প্রদত্ত সেবা মূল্য থেকে বঞ্চিত হতো। মানসম্মত সেবা পেতেন না সেবা গ্রহীতারা। ইউনিয়ন পরিষদ প্রদত্ত সেবামূল্য নগদ গ্রহণ বা রসিদ ব্যতীত অর্থ গ্রহণের কারণে তছরুপ হতো সরকারি অর্থ। এমন পরিস্থিতি উত্তরণে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রমকে প্রান্তিক পর্যায়ে জনসাধারণের দোরগোড়ায় ডিজিটাল বাংলাদেশের মূলমন্ত্র বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতপূর্বক স্বল্প খরচে, স্বল্প সময়ে, স্বল্প ভ্রমণে বা শূন্য ভ্রমণে এবং হয়রানিমুক্তভাবে গুণগত সেবা প্রদান ও গ্রহণ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় অনলাইন পস্ন্যাটফর্ম 'ডিজিটাল ও ক্যাশলেশ ইউনিয়ন ট্যাক্স ও ইউপি সেবা সিস্টেম। গত ৬ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদে ক্যাশলেস সেবাটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রংপুর বিভাগের কমিশনার সাবিরুল ইসলাম বিপস্নব।
বুধবার সকালে পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, জন্মসনদ, ট্রেডলাইসেন্স সেবা নিতে আসা সেবাগ্রহীতারা ক্যাশলেসের মাধ্যমে সেবা নিচ্ছেন। পশ্চিম শিংপাড়া গ্রামের মৃত তাজিম উদ্দীনের মেয়ে সমিজা খাতুন এসেছেন নাগরিকত্ব সদন নিতে। তিনি জানালেন, 'কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই ক্যাশলেসের মাধ্যমে ফি পেমেন্ট করে সেবাটি গ্রহণ করলাম। খুব ভালো লাগল সার্ভিসটি।'
পঞ্চগড় সদর ইউএনও মাসুদুল হক জানান, দেশের প্রথম জেলা হিসেবে পঞ্চগড় ক্যাশলেস যুগে প্রবেশ করল। এখন থেকে ইউনিয়ন পরিষদে এসে নাগরিকদের আর কোনো ধরনের ভোগান্তি পেতে হবে না।