বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পিরোজপুর-নাজিরপুর সীমানা খালের ব্রিজ বেহাল

গাইবান্ধায় অবকাঠামো নির্মাণে ব্রিজের মুখ ভরাট জলাবদ্ধতার আশঙ্কা
স্টাফ রিপোর্টার, পিরোজপুর
  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
গাইবান্ধায় এভাবেই ব্রিজের মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে -যাযাদি

পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের দক্ষিণ জয়পুর ও পিরোজপুর জেলার সদর উপজেলার সিকদার মলিস্নক ইউনিয়নের গণক পাড়া গ্রামের সীমানা খালের ওপরের সংযোগ ব্রিজের বেহাল দশা। ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজ দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শত শত কোমলমতি ছাত্রছাত্রী ও জনসাধারণ। এছাড়া ব্রিজ দিয়ে ছোট মাঝারি যানবাহন চলাচল করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন অটোভ্যান, মোটর সাইকেল ও ব্যবসায়ীরা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর পূর্বে নির্মিত ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। শ্রীরামকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে কাঠের তক্তা দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে যাতায়াতের কোনোরকম ব্যবস্থা করলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই পূর্বের অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে ব্রিজটি। দীর্ঘদিনেও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি সংস্কার না করায় পারাপার হতে গিয়ে অনেক পথচারী দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।

জানা যায়, ব্রিজের পূর্ব পাড়ে ৮৫ নম্বর দক্ষিণ জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পশ্চিম পাড়ে রাস্তা দিয়ে আধাঝুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিকদার মলিস্নক নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, নাজিরপুর উপজেলার সদরের অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা কেন্দ্রে এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ পারাপার হয়েই তাদের যোগাযোগ রক্ষা করতে হচ্ছে। দুই ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী হওয়ায় স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধিরাই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি সংস্কারের জন্য কোনো উদ্যোগ নেননি। তাই এলাকাবাসী জরুরি ভিত্তিতে ব্রিজটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

খেজুরতলা সম্মিলন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অসীম মজুমদার বলেন, সীমান্তবর্তী হওয়ায় ব্রিজটি সংস্কারের উদ্যোগ কেউই নিচ্ছে না, যার ফলে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতে খুব কষ্ট হয়।

শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানান, গত অর্থ বছরে পরিষদ থেকে সামান্য কিছু টাকা বরাদ্দ দিয়ে কাঠের তক্তা দিয়ে সংস্কার করেছিলেন। তবে ব্রিজটির কাজ এলজিইডি থেকে পুনরায় করা না হলে পরিষদের বরাদ্দে যোগাযোগের উপযোগী করা সম্ভব নয়। পিরোজপুর সদর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী হরসিত সরকার জানান, ব্রিজটি সংস্কার করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব পাস হলে ব্রিজের কাজ করা সম্ভব হবে।

এদিকে গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য গাইবান্ধা পৌরসভার কলেজ রোডে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি ব্রিজের (কালভার্ট) মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। এর ফলে পৌরসভার ৫টি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পাবে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন দেখা যায়, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে গাইবান্ধা শহরের অন্যতম ব্যস্ততম কলেজ রোডের প্রফেসর কলোনি সংলগ্ন এলাকায় ব্রিজের মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। ব্রিজের মুখ ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে সদর হাসপাতালসহ পলাশপাড়া, গাড়িয়াল পট্টি, ফকিরপাড়া, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্থানীয় জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

জানা গেছে, আইন অনুযায়ী কেউ জলাধার ও পানি নিষ্কাশনের রাস্তা বন্ধ করতে পারেন না। অথচ সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ব্রিজের মুখ বন্ধ করা হয়েছে। এর আগেও ওই ব্রিজের মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করার চেষ্টার বিরুদ্ধে গাইবান্ধা পৌরসভা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল।

এ ঘটনায় গাইবান্ধা পৌর মেয়র মতলুবর রহমান বলেন, জনস্বার্থ ও পরিবেশ আইন উপেক্ষা করে কলেজ রোডের ওই ব্রিজের মুখ ভরাট করতে রাতের আঁধারে মাটি ফেলা হয়েছে। এর আগেও এই অপচেষ্টা করা হয়েছিল। সে সময় প্রশাসনকে অবগত করে পৌরসভার পক্ষ থেকে মাটি অপসারণ করা হয়েছে। বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পৌরসভা অবিলম্বে পৌরসভা আইন ২০০৯-এর ১১৭ ধারা এর বিধান এবং জলাধার আইন ও মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযুক্ত তৌহিদ জামান মিতার স্বামী ইব্রাহীম আকন্দ সেলিম বলেন, আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে মাটি সরিয়ে ফেলা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে