কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের একটি গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা পাকা না করায় বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। এর ফলে ওই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি পাকা করার দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সংশ্লিষ্টরা এটি পাকাকরণের ব্যাপারে উদাসীন। তাই বাধ্য হয়ে পাকা করার দাবিতে স্থানীয় যুবকরা এবার ফেসবুক লাইভে এসে কর্দমাক্ত রাস্তায় ধান গাছের চারা লাগিয়ে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যাপারিপাড়া হতে মৃত নুর হোসেন মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি দীর্ঘ কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও অজ্ঞাত কারণে পাকা হয়নি। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ওই রাস্তাটি বর্তমানে কাঁদামাটিতে একাকার হয়ে গেছে। ফলে রাস্তাটি দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে যেতেও পথচারীদের পোহাতে হয় সীমাহীন দুর্ভোগ। তাই ভুক্তভোগী ওই গ্রামের লোকজন ক্ষোভে ও অভিমানে রাস্তাটিতে ধান গাছের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব আলী, সিদ্দিক হোসেনসহ অনেকেই জানান, প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ওই রাস্তাটি আরও কয়েকটি গ্রামের ভেতর দিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। বিভিন্ন নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধি কিংবা রাজনৈতিক কর্মীরা ওই রাস্তাটি পাকা করার জন্য বহুবার আশ্বাস দিলেও অজ্ঞাত কারণে তা দীর্ঘদিনেও কার্যকর হয়নি। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগ আর কষ্ট করেই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন আশপাশের গ্রামের মানুষজন।
এদিকে হঠাৎ রাস্তায় ধান গাছের চারা রোপণ প্রসঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেহাল রাস্তাটির উন্নয়ন না হওয়ায় ভুক্তভোগী ওই গ্রামের যুবকরা ক্ষোভে রাস্তাটিতে ধানের চারা লাগান। এবং সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি আপলোড করে প্রতিবাদ জানান ও এর প্রতিকার দাবি করেন।
এ সময় স্থানীয় অটোরিকশা চালক আলাল মিয়া ও ইমান আলী জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই ওই রাস্তায় মারাত্মক কাদার সৃষ্টি হয়। তখন অটোরিকশা নিয়ে যাওয়া কষ্ট হয়। এমনকি অন্য সাইকেল কিংবা মোটর সাইকেল চলাচলেও অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। তাছাড়া খালি পায়ে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ভারি বর্ষণ হলে এ ভোগান্তি যেন আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয় পথচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, কর্দমাক্ত ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে অনেক শিক্ষার্থী পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অন্যদিকে ভারি বর্ষায় কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে রোগীদেরও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহেল জানান, ওই কাঁচা রাস্তাটির বিষয়ে তিনি অনেক আগে থেকেই খোঁজ-খবর রাখছেন ও সমাধানে সচেষ্ট রয়েছেন। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছেন। আশা করছেন শিগগিরই রাস্তাটির টেকসই উন্নয়নের সুফল এলাকাবাসী পাবেন।