মানবপাচার ঘৃণিত একটি কাজ। কোনো দেশের আইন মানবপাচারের পক্ষে নয়। পাচারের মাধ্যমে অনেকে অবৈধভাবে প্রবাসে গিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছে। সেখানে সড়কের পাশে কিংবা জঙ্গলেই কাটছে তাদের রাত। এছাড়া স্থানীয় পুলিশের ভয় নিত্যদিনের সঙ্গী। বৈধভাবে না যাওয়ায় ভালো কোনো কাজও পাচ্ছেন না। শুধু বিদেশ সংশ্লিষ্ট নয়, দেশের অভ্যন্তরেও মানবপাচার হয়ে থাকে। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। গত মঙ্গলবার কক্সবাজার শহরের হোটেল শৈবালের সাগরিকা রেঁস্তোরার কনফারেন্স হলে 'মানবপাচারের ভুক্তভোগীদের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা: আমাদের করণীয়' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।
আইনজীবী সালমা আলী আরও বলেন, মানবপাচার আইন নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের আগে ভিকটিমদের কথা শুনতে হবে। প্রয়োজনে কালো গাউন ছেড়ে রোড লেভেলে যেতে হবে। মানব পাচারচক্রের হাত থেকে উদ্ধার পাওয়া মানুষদের দক্ষতা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি জীবিকায়ন নিশ্চিত হয়। তাছাড়া ভুক্তভোগীদের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা, রোজগার করা, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া এবং স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
আইওএম কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, 'মানবপাচারের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের বেশিরভাগই তরুণ। অভিবাসী শ্রমিকরা নারী হোক আর পুরুষ হোক, তাদের অনেকেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বিষয়গুলো খুবই বেদনাদায়ক। আমরা শুধু অর্থায়নে সীমাবদ্ধ নই। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছি। তবে সরকারের দায় আরও বেশি।'
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক লিটন কান্তি চৌধুরী, কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস, এনজিও পস্ন্যাটফর্মের আমির হোসেন, অ্যাকশন এইডের প্রোটেকশন লিডার নুজুলি বেগম বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) প্রকল্প ব্যবস্থাপক শাহিদা পারভীন, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী, ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড (ইউএনএফপিএ) আলমগীর কাদেরী, কক্সবাজার জজ আদালতের আইনজীবী বিশ্বজিত ভৌমিক, কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাকী-এ-কাউছারসহ সাংবাদিকরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রোগ্রাম অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের পরিচালক নাফিজ ইমতিয়াজ হাসান।