মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
বঞ্চিত গর্ভবতী মা-শিশুরা

মাদারীপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নানা অনিয়মে স্বাস্থ্যসেবা

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
মাদারীপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নানা অনিয়মে স্বাস্থ্যসেবা

মাদারীপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থানায় ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সুসজ্জিত স্থাপনা, আসবাবপত্রসহ চিকিৎসার জন্য সরঞ্জাম থাকলেও দায়িত্বরত চিকিৎসক ব্যস্ত থাকেন প্রাইভেট ক্লিনিকে। এতে করে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গরিব ও অসহায় শত শত মা ও শিশু। চিকিৎসক ও নারী পরিদর্শকের কেন্দ্রে থাকার নিয়ম থাকলেও নানা অজুহাতে বেশিরভাগ সময় তারা অনুপস্থিত থাকেন। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা গর্ভবতী মা ও শিশুরা পড়েন চরম দুর্ভোগে।

জানা গেছে, এ বছর এপ্রিল মাসে সাবিনা বিনতে আলমগীর নামে এক নারী চিকিৎসক মাদারীপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র মেডিকেল অফিসার পদে যোগদান করেন। তিনিই এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের প্রধান। কিন্তু তিনি ঠিকমতো কোনো গর্ভবতী রোগী দেখে না। ঠিকমত কেন্দ্রে আসেন না। তিনি সরকারি সেবা না দিয়ে শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়মিত রোগী দেখেন। গর্ভবতী মহিলাদের সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করান। অথচ তার দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এই মা ও শিশু কেন্দ্রে থাকার বিধান রয়েছে। ইমপস্নান্ট ডাক্তারের নিজের পরানোর কথা থাকলেও তিনি আয়া ও নার্সদের দিয়ে পরান। এছাড়াও ভুয়া ডেলিভারি রিপোর্ট করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দায়িত্বরত পরিদর্শিকাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে টাকা দাবি করেন। যারা টাকা দিতে অস্বীকার করেন তাদেরকে বদলি করেন দেন বলেও অভিযোগ।

পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহনাজ বলেন, 'সাবিনা বিনতে আলমগীর ম্যাডাম ঠিকমতো অফিসে আসেন না। রোগী দেখেন না। প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়মিত রোগী দেখেন। এদিকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গর্ভবতী মায়েদের ডেলিভারি করানোর পরে ম্যাডাম তাদের কাছ থেকে টাকা নিতে বলেন। আমরা অনৈতিক টাকা না নিতে চাইলে তিনি আমাদেরকে উল্টো চাকরি হারানোর ভয় দেখান।'

ছয় মাসের গর্ভবতী শাহিদা আক্তার নামের এক রোগী বলেন, আমি তিন দিন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে ডাক্তারকে পাইনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে পরে প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় গেছি। আমরা গরিব মানুষ। সরকার আমাদের জন্য সরকারি হাসপাতাল করেছে, সেখানে আমাদের জন্য ডাক্তার দিয়েছে। তারপরও আমরা ডাক্তারের সেবা থেকে বঞ্চিত।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে মাদারীপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার সাবিনা বিনতে আলমগীর বলেন, 'যেসব পরিদর্শিকাদের বদলি করা হয়েছে তারাই আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। টাকা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে একটি শিশু মারা গেছে। তখন প্রশাসন ম্যানেজ করতে কিছু খরচাপাতি দিতে হয়েছে। এ কারণে আমি তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি।'

মাদারীপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক অলিউর রহমান বলেন, 'এ বিষয়ে আমাদের কাছে যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে