রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ নানা সংকটে বেড়েছে হরিণা চিংড়ির চাষ

আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ নানা সংকটে বেড়েছে হরিণা চিংড়ির চাষ
প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ নানা সংকটে বেড়েছে হরিণা চিংড়ির চাষ

প্রাকৃতিক বিপর্র্যয়, বাগদা চিংড়ি পোনার অপ্রতুলতা ও দাম বেশি হওয়ার কারণে আশাশুনিতে হরিণা চিংড়ি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন সাধারণ চাষিরা। বিক্রির সময় বাগদা ও হরিণা চিংড়ির দাম প্রায় সমান হওয়ায় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই বেড়ে ওঠায় চাষিরা এর চাষে ঝুঁকছেন বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আবার হরিণা চিংড়ির পোনা আশপাশের নদী থেকে সহজেই আহরণ ও কেনা যায়। অল্প খরচে উৎপাদন ও বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরা বাগদার দিকে না ঝুঁকে হরিণা চিংড়িকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।

২০২৩ সালে আশাশুনি উপজেলার চিংড়ি চাষের পুরস্কারপ্রাপ্ত চিংড়ি চাষি সাজ্জাদুল হক টিটুল জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, নদী খননের কারণে ঠিক সময়ে লোনা পানি না পাওয়া, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় লোনা পানির ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় ও পোনা সংকটের কারণে উপযুক্ত সময় বাগদা চিংড়ি চাষ করা যায়নি। বছরের শেষ সময় চিংড়ি চাষ ভালো না হাওয়ায় স্বল্প খরচে আশপাশের নদী থেকে হরিণা চিংড়ির পোনা সংগ্রহ করে চাষ করা হয়। এতে ভালো ফল পাওয়া যায়। তাই এলাকার চিংড়ি চাষিরা হরিণা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। হরিণা চিংড়ি পোনার প্রধান উৎস পাশের যেকোনো নদী। মৎস্যঘেরে যদি সরাসরি জোয়ারের পানি ওঠানামা করে তাহলে পোনা কিনতে হয় না। সেটা সব ঘেরে সম্ভব নয়, বিধায় বাইরে থেকে হরিণা চিংড়ির পোনা কিনে ঘেরে ছাড়তে হয়। জোয়ারের পানি নদীর চরে উঠলে চরের খানাখন্দে জমে থাকা পানিতে চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছের পোনা আটকে যায়। সেগুলো নেটজাল দিয়ে ছেঁকে ঘেরে ছাড়া যায়।

কাদাকাটি ইউনিয়নে বিশিষ্ট চিংড়ি চাষি গোলাম মোস্তফা জানান, হরিণা চিংড়ির খাদ্য তালিকা খুবই কম। এ চিংড়ি দ্রম্নত বড় করতে গেলে প্রতিদিন ঘেরে অটোপালিশ ও গমের ভুসি পরিমাণ মতো দিতে হবে। তাহলে ৪০ থেকে ৫০ দিনের মধ্যেই মাছ বিক্রি করা যাবে। এ মাছে বাগদার মতো রোগবালাই খুব একটা দেখা যায় না। ২০০ টাকা দিয়ে ১ হাজার মাছ যদি ভালো মতো ফোটে, তাহলে প্রায় ৮ থেকে ১০ কেজি চিংড়ি উৎপাদন করা সম্ভব। বড় হরিণা এক কেজি প্রায় ৫৫০ থেকে সাড়ে ৬০০ টাকা বিক্রি হয়। যেখানে ৯০০ টাকা দিয়ে বাগদা ছেড়ে যদি বেচে থাকে তবে তার দাম (৩০ পিস) ৪৫০ টাকার মতো। তাই বাগদা চাষই এখন ঝুঁকির ব্যবসা মনে করে স্বল্প খরচে হরিণা চিংড়ি চাষকে লাভজনক ভাবছেন চাষিরা।

চিংড়ি চাষিদের বৈধভাবে পোনা দিয়ে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, সেজন্যে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন চাষিরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে