গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে গরু চুরির ঘটনা। গরুর মালিকরা রাত জেগে পাহারা দিয়েও ঠেকাতে পারছেন না গরু চুরি। গত ২০ দিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২০টির মতো গরু চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় কৃষক নিঃস্ব হয়ে গেলেও চুরি ঠেকাতে কিংবা চুরি হওয়া গরু উদ্ধারে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
জানা গেছে, সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে প্রায় রাতেই উপজেলার কোথাও না কোথাও গরুসহ ছোট-বড় চুরির ঘটনা ঘটছে। যেগুলোর বেশির ভাগ ঘটছে উপজেলার গোসিংগা এলাকায়। এছাড়াও গাজীপুর, মাওনা ও বরমী এলাকায় চোরের উপদ্রপ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে খামারিদের। তাদের অভিযোগ, মধ্যরাতে উৎপাদন ঘাটতি ও বৃষ্টির অজুহাত দিয়ে বিদু্যৎ অফিস লাইন বন্ধ করে দেওয়ায় এসব চুরির ঘটনা ঘটে।
ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদু্যতের লোডশেডিংকে দায়ী করে পোস্ট দিয়েছেন উপজেলার গোসিংগা ইউপির চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান শাহীন। তিনি লিখেন, 'গরু চুরি হয় আনুমানিক রাত ২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে। উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের একাংশ নারায়ণপুর, লতিফপুর, গোসিংগা, বাউনীসহ আরও কিছু জায়গা বিদু্যৎ পরিচালনা করে কাপাসিয়া বিদু্যৎ অফিস। ঠিক এ সময় ধরেই প্রতিরাতে বিদু্যৎ চলে যায়। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। চেয়ারম্যান গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদ।'
অনেকেই জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে গোসিংগা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের আফাজ উদ্দিনের বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের ৬টি গরু চুরি হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর শেষ রাতে ইউনিয়নের হেরা পটকা গ্রামের ইব্রাহিম মুন্সির ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের তিনটি গরু, গত সপ্তাহে বরমী ইউনিয়নের তাঁতিসুতা গ্রামের মহসিন মিয়ার একটি গরু চুরি হয়। পরে জঙ্গল থেকে তার গরু উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের কামরুল ইসলাম মীরের পাঁচটি গরু চুরি হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক বলেন, কৃষককে হাটবাজারে খোঁজখবর নিয়ে তথ্য দিতে বলেছেন। ক্লু পেলে তারপরই অভিযান চালাবেন। পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির কাপাসিয়া জোনাল অফিসের এজিএম রিফাত ভূঁইয়া জানান, 'আমাদের চাহিদা ১৭ মেগাওয়াট। পাচ্ছি ১০ মেগাওয়াট, যা দিয়েই কভার দিতে হয়। সে কারণে গোসিংগা এলাকায় রাতে লোডশেডিং দিয়ে থাকি।'
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোহাম্মাদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি রাতেই নিয়মিত পুলিশের টহল চলছে। কাপাসিয়ায় গরু চুরির ঘটনা শুনেছেন। শ্রীপুরে এমন ঘটনা জানা নেই। এমন হলে পুলিশের পাশাপাশি গরুর মালিকদেরও সতর্ক থাকতে হবে।