শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে নিজ নবজাতক সন্তানকে দিতে হলো দত্তক

পথে পথে ঘুরছে জনম দুঃখী মা
গাজীপুর প্রতিনিধি
  ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

সিজারিয়ান অপারেশনের পর বিল পরিশোধ করতে না পেরে নিজ নবজাতককে দত্তক দিয়ে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেছেন এক অসহায় মা। সন্তান ফিরে পাওয়ার আশায় এলাকার সমাজপতিদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন ফল মেলেনি অসহায় এ মায়ের। সন্তানহারা মায়ের কান্নায় যেন এখন মন গলছে না কারও। এখন সন্তান ফিরিয়ে আনতে ওই মা পড়েছেন দালালদের কবলে।

শুক্রবার গাজীপুরের শ্রীপুরের ফরিদপুর গ্রামে কথা হয় নবজাতকের মা শিরিন আক্তারের সঙ্গে। শিরিন আক্তারের (২০) বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার মনিকুরা গ্রামে। তিনি মা বাবার সঙ্গে শ্রীপুরের ফরিদপুর গ্রামে ভাড়া থাকেন। শিরিন আক্তারের আবু জাহিদ নামে দেড় বছর বয়সী আরও এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

শিরিনের পরিবার জানায়, শিরিন আক্তারের স্বামী আরিফুল ইসলাম বিভিন্ন পরিবহনে সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করেন। তিনি মাদকাসক্ত, তাই ৪-৫মাস আগে তার সঙ্গে পরিবারের দূরত্ব তৈরি হয়।

গত ১৬ অক্টোবর সন্তান সম্ভবা মেয়ে শিরিনকে নিয়ে ময়মনসিংহের চরপাড়া এলাকার স্বাধীন নার্সিং হোমে ভর্তি করান বাবা সিরাজুল ইসলাম। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন শিরিন।

বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সন্তান সম্ভাবা মেয়েকে নিয়ে মাথায় বাড়তি চাপ ছিল। হাসপাতালের বিল ২৪ হাজার ৫০০ টাকা হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেশী শামসুন্নাহার নামের এক নারীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। ওই নারী মেয়ের সিজারিয়ান অপারেশনের টাকা জোগাড় করতে সন্তান দত্ত্বক দিতে বলেন। তখন নবজাতককে শামসুন্নাহার ও আল আমিনের কাছে তুলে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তার মেয়ে সন্তানের জন্য শুধুই কেঁদে যাচ্ছেন। সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে গেলে তারা এখন ৭০ হাজার টাকা দাবি করেছেন।

নবজাতকের মা শিরিন আক্তার বলেন, 'শেষ বারের মতো আমার সন্তানকে তারা দেখতেও দিল না। এখন আমি আমার সন্তানকে ফেরত চাই।'

এ বিষয়ে স্বাধীন নার্সিং হোমের পরিচালক খোকন বলেন, বিল কে দিয়েছে আর নবজাতককে কি করেছে এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, 'এমন বিষয়টি আমাদের কেউ এখন জানাননি। তার কাছে যদি পরিবারটি সহায়তার জন্য আসে অবশ্যই যথাযথ সহায়তা করা হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে