বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
walton

টাঙ্গাইলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের গলার কাঁটা 'কোচিং ফি'

স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
  ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

টাঙ্গাইলের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তিন মাসের 'কোচিং ফি' হিসেবে মাথাপিছু আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা আদায় করছে। ওই কোচিং ফি'র টাকা যোগার করতে অভিভাবকরা হিমশিম খাচ্ছেন। কেউ কেউ গরু-ছাগল বিক্রি করে টাকার যোগান দিচ্ছেন। অনেকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশ নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দ্বারস্থ হচ্ছেন।

জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৬৫টি, দাখিল মাদ্রাসা ১৭৭টি এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে ২৪টি।

মাউশি ঢাকা বোর্ডের প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, স্কুলগুলো চলতি বছরের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেতন ও সেশন চার্জের টাকা নিতে পারবে। তবে নবম ও দশম শ্রেণির মোট ২৪ মাসের বেশি বেতন ও সেশন চার্জ নিতে পারবে না। এ বোর্ডে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফি হিসেবে মানবিক বিভাগে ২০২৪ টাকা, বাণিজ্য ২০২৪ টাকা, বিজ্ঞান বিভাগে ২১৪০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পত্রপ্রতি ১১০ টাকা, ব্যবহারিকের ফি বাবদ পত্রপ্রতি ৩০ টাকা, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের ফি বাবদ পরীক্ষার্থী প্রতি ৩৫ টাকা, মূল সনদ বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ১০০ টাকা, বয়েজ স্কাউট ও গার্লস গাইড ফি বাবদ ১৫ টাকা এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি বাবদ পরীক্ষার্থী প্রতি ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে কোচিং ফি নেওয়ার কোনো নিয়ম রাখা হয়নি। অথচ প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোচিং ফি হিসেবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে।

পরীক্ষার্থী সানজিদা আক্তার, শামীমা আক্তার রত্না, রাশিদুল হাসান, হৃদয় হাসান, আজিুল হাকিমসহ অনেকেই জানায়, এসএসসি পরীক্ষার আগে তিন মাস কোচিংয়ের জন্য প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই কোচিং ফি নিয়ে থাকে। কিন্তু সে অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয় না।

অভিভাবক রাজন বিশ্বাস, আলী আজগর, হাসমত আলী, রাশেদুর রহমান, পারুল আক্তার, হাসনা বেওয়াসহ অনেকেই জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা রকম ফি'সহ বোর্ড নির্ধারিত টাকা দেওয়ার পরও কেন্দ্র ফি' এবং কোচিং ফি দেওয়া তাদের জন্য বাড়তি চাপ। তারপরও পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে নানাভাবে টাকা যোগার করে তারা কোচিং ফি পরিশোধ করেছেন।

কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান জানান, শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল করার জন্য বাড়তি পড়ালেখা করাতে তিন মাস কোচিংয়ের ব্যবস্থা। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভায় রেজুলেশন করে কোচিং ফি নির্ধারণ করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে কোচিং ফি নেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তাছাড়া কোচিং ফি হিসেবে যে অল্প পরিমাণ টাকা নেওয়া হয়- তা শিক্ষকদের হাতখরচেই চলে যায়। টাকার বিনিময়ে কোচিং করানো হয়- বিষয়টা এভাবে মূল্যায়ন করাটা সঠিক নয়।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা জানান, জেলায় এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এখনো সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। বোর্ড নির্ধারিত ফি'র বাইরে অভিভাবকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার কোনো সুযোগ নেই। কোনো প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
shwapno

উপরে