রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্মার্ট সিটির প্রত্যয় পলকের ভোট চান নৌকায়

আকতার হোসেন অপূর্ব, সিংড়া (নাটোর)
  ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
নাটোরের সিংড়ায় নৌকা প্রার্থী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলকের উন্নয়নের চিত্র -যাযাদি

চলনবিল অধু্যষিত নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে নৌকা প্রার্থী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক নৌকার ভোট চেয়ে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। মানুষকে শোনাচ্ছেন স্মার্ট সিটি বিনির্মাণের গল্প। বদলে যাওয়া সিংড়াকে ধারাবাহিক উন্নয়নের ধারায় স্মার্ট সিটি করতে যান তিনি।

উপজেলার প্রতিটা ইউনিয়নে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট চাচ্ছেন তিনি। ভোটারদের কাছে তুলে ধরছেন গত ১৪ বছরে সিংড়ায় উন্নয়নের গল্প। তার গল্পের সঙ্গে বাস্তবের মিল দেখে ভোটাররাও তাকে ফুল দিয়ে বরণ নিতে কার্পণ্য করছেন না। যখনই যেই এলাকায় পৌঁছুচ্ছেন, সেখানেই চলছে মুহুর্মুহু স্স্নোগান আর অভিনন্দন বার্তা।

তথ্য মতে, দীর্ঘ ৩৭ বছরে অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া চলনবিল অধু্যষিত সিংড়াকে আধুনিক, স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রত্যয় নিয়েছেন পলক। দেশের উন্নয়ন আর এগিয়ে চলার বাতিঘর হিসেবে খ্যাত শেখ হাসিনার অনুসারী হিসেবে সিংড়াকেও গড়তে চান স্মার্ট সিটি হিসেবে।

জানা যায়, ২০০৮ সালে প্রথম নির্বাচিত হন জুনাইদ আহমেদ পলক। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরতে হয়নি। পরপর দু'বার আইসিটি মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। সিংড়াকে গড়েছেন নিজ স্বপ্নে বুনানো বিছানায়, উন্নয়নের সোপানে।

সরেজমিনে জানা যায় আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিংড়ায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের শেরকোল এলাকায় আইসিটি বিভাগের অধীনে আইটি পার্ক, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবিশন সেন্টার, সিংড়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ওইসব প্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ।

জানা যায়, সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালু হলে প্রায় ২০ হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে সিংড়াতেই। শুধু তাই নয়, বিগত ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে পলকের আরেকটি দৃষ্টিনন্দন এবং স্মরণীয় উদ্যোগ সিংড়া-বারুহাঁস-তারাশ সাবমারসিবল সড়ক। ওটি নির্মাণের পরে সিংড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো ২০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছাতে পারেন এখন সিংড়ায়। এতে উন্নত হয়েছে সিংড়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা।

স্থানীয়রা জানান, ইতোমধ্যেই পৌরবাসীকে প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক সিংড়ায় শেরকোলে জোড় মলিস্নকা সেতু, সিদাখালি সেতু, মরহুম ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ সেতু, দুখুমিয়া সেতু, ফোনু সেতু, বকুল মধু সেতু, ফুলমারির সেতু ঘাট সেতু, চন্দ্রপুর ঘাট সেতু, কলম ইউনিয়নের বালিয়াবাড়ি সেতু ও চৌগ্রামের বরিয়াখালের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু সেতু চালু হয়েছে। অন্যগুলো নির্মাণাধীন। সব সেতু চালু হলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ কাদামাটি গায়ে মাখানো ছাড়াই পৌর শহরে পৌঁছে মেটাতে পারবেন নিজেদের প্রয়োজন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা পংকজ কুমার ভট্টাচার্যের দাবি, পলকের বিগত সময়ে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গর্বের জায়গা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা কমপেস্নক্স ভবন। প্রায় ৮ শতক জায়গায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পাশেই বাসস্ট্যান্ড এলাকাতেই নির্মাণ করা হয় ওই মুক্তিযোদ্ধা কমপেস্নক্স। এছাড়াও করা হয়েছে বেশ কিছু বীর নিবাস। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরও ১৫টি বীর নিবাস নির্মাণের কাজ।

স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবীদের দাবি, প্রতিমন্ত্রী পলকের সিংড়ায় উন্নয়নের আরেকটি মাত্রা হলো ৩৫০ কিলোমিটার খাল খনন এবং পুনঃখাল খনন। এই কাজ হওয়ায় মৎস্য ভান্ডার খ্যাত সিংড়ার মৎস্যজীবীরা একদিকে যেমন মাছ চাষ করতে পারছেন ওই খালে, অন্যদিকে ওই খালের পানি ব্যবহার করে সমৃদ্ধি এসেছে কৃষিতে।

সিংড়া পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের আরেকটি উলেস্নখযোগ্য বিষয় হলো শহররক্ষা বাঁধ। আগে সিংড়া শহরের নাগরিকরা প্রায়ই দুর্ভোগে পড়তেন। কেননা, পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পানিতে বন্যায় নিমজ্জিত হতো তাদের বাড়িঘর। কিন্তু পলক এক কিলোমিটার গাইডওয়ালসহ সাত কিলোমিটার শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেন। এতে একদিকে যেমন বিকালে হাঁটার জন্য ওই ওয়াকওয়ে হয়েছে, অপরদিকে তারা রক্ষা পেয়েছেন বন্যার মতো দুর্যোগের হাত থেকে।

নৌকা প্রার্থী পলক জানান, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও এমপি নির্বাচিত হলে সিংড়ায় একটি শিশু পার্ক, একটি নলেজ পার্ক, মার্কেট, সিংড়ায় হাট-বাজারের জায়গা সম্প্রসারণ, পৌর এলাকায় দু'টি ব্রিজ নির্মাণ, ২০ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ, ১০ কিলোমিটার আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ড্রেন নির্মাণ, পৌর এলাকায় প্রধান সড়কে ফুটপাত নির্মাণ, গ্রোথ সেন্টার নির্মাণ, ওভার হেড ট্যাংক ও হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসস্থল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন তিনি।

শুধু তাই নয়, মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় শ্মশানের সংস্কার কাজ করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে