বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১

চকরিয়ায় বালু উত্তোলনে বিপাকে ৩০ পরিবার

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাটি বিক্রি করে পুকুর বানিয়ে মাতামুহুরী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে এভাবেই তোলা হচ্ছে বালু -যাযাদি

চকরিয়ায় সরকারি বিএফআইডিসি'র কাঠের ডিপোকে অবৈধ বালু উত্তোলন কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। ফলে পার্শ্ববর্তী পাড়ার প্রায় ৩০ পরিবারের ঘরবাড়ি মাতামুহুরী নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতোমধ্যে একজন বিধবা নারীসহ ৩ জনের বাড়ির একাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

অভিযোগে প্রকাশ, স্বাধীনতাপরবর্তী রেলের স্স্নিপার ও কাঠের বৈদু্যতিক খুঁটি তৈরির জন্য বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন সংস্থার (বিএফআইডিসি) সাংগু-মাতামুহুরী কাঠ আহরণ প্রকল্পের অধীনে চকরিয়ার উত্তর লক্ষ্যারচর চরপাড়ায় একটি কাঠের ডিপো স্থাপন করে। মূলত পার্বত্য আলীকদম উপজেলার লক্ষাধিক একর এলাকার মাতামুহুরী রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে বিশাল আকৃতির প্রথম শ্রেণির গাছের লট কেটে রদ্দা ও গোল কাঠে পরিণত করে আহরণ করা লাখ লাখ ঘনফুট কাঠ মাতামুহুরী নদী পথে এনে এই ডিপোতে তোলা হতো। পরে ট্রাকযোগে গর্জন, চাপালিশ, তেরসুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির এসব গোল ও রদ্দা কাঠ চট্টগ্রামের কালুরঘাট মোহরা এলাকায় স্থাপিত প্রকল্পের কারখানায় নেওয়া হতো। কিন্তু কালক্রমে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে মাতামুহুরী রিজার্ভ থেকে সেই কাঠ আহরণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এই সুযোগে পড়ে থাকা ডিপো এলাকার মাটি বিক্রি করে পুকুর বানিয়ে মাতামুহুরী নদীতে উচ্চ ক্ষমতার ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে এই কাঠের ডিপোকে বালু তোলার কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে ক্ষতির শিকার স্থানীয় নুরুল আলম জানান, এই ড্রেজারের কারণে ইতোমধ্যে তার চার রুমের বসতঘরের দুই রুম মাতামুহুরী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অপর বাসিন্দা সিরাজ জানান, তার বাড়ির একাংশ নদীতে চলে গেলেও কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসছে না। সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় হচ্ছে, বিধবা জান্নাত আরার অসহায়ত্ব। তিনি স্বামী হারানোর পর ক্ষেত মজুরের কাজ করে চার সদস্যের পরিবার চালান। তার বাড়ির একমাত্র টয়লেট, টিউবওয়েল ও ঘরের একাংশ বিলীন হওয়ায় দুইটি বিবাহযোগ্যা মেয়ে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগে ও রাতে নদীর পাড়ে প্রাকৃতিক কাজ সারতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামস্থ বিএফআইডিসি'র সাংগু-মাতামুহুরী কাঠ আহরণ প্রকল্পের ম্যানেজার আতিকুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর করেছেন বলে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সোমবার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত-উজ-জামান বলেন, অতিসত্বর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে