শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
মাঠে পুড়ছে কৃষকের ফসল

প্রচন্ড গরমে গলে যাচ্ছে পাকা সড়কের পিচ

পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
  ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
তীব্র তাপপ্রবাহে গলে যাওয়া সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা-খলিশখালি সড়কের পিচ (বিটুমিন) -যাযাদি

তীব্র দাবদাহে গলে যাচ্ছে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থেকে খলিশখালী সড়কের পিচ (বিটুমিন)। একই সঙ্গে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জন-জীবন। বিগত কয়েকদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। তীব্র এ দাবদাহে শুধু শহর নয়, গ্রামের হাট-বাজারগুলো প্রায় মানবশূন্য। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। সম্প্রতি কয়েকদিনের এ গরমে পাটকেলঘাটা টু খলিশখালী সড়কের ইসলামকাটি মোড়সংলগ্ন পাকা রাস্তাটির পিচ গলে যাওয়াসহ খোয়া উঠে খানাখন্দকে পরিণত হয়েছে। যা হাঁটাচলার জন্য অনেকটা অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কে চলাচলকারী নিতাই কুমার ঘোষ বলেন, 'আমি চাকরির স্বার্থে দীর্ঘদিন এই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করি। কিন্তু এ দুইদিন রাস্তাটির পিচ গলে খুবই বাজে অবস্থায় পরিণত হয়েছে। রাস্তাটির নির্মাণকাজ দুই বছর ধরে চললেও এর সুফল আমরা আজও ভোগ করতে পারিনি। সঠিক নিয়ম না মেনেই ঢিলেঢালাভাবে চলছে সড়কের কাজ। উপজেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিরা তো ভোট নিয়ে ব্যস্ত। রাস্তাটির দিকে নজর দেওয়ার মতো কেউ নেই।' শাহিন নামে এক পথচারী বলেন, 'পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ খেয়াল করি রাস্তার পিচের সঙ্গে জুতা জোড়া লেগে যাচ্ছে। গলা পিচ থেকে ছাড়াতে গিয়ে জুতার সোল ছিড়ে গেছে। এখন নতুন জুতা কিনে বাড়ি ফিরতে হবে।' এ বিষয়ে তালা উপজেলা প্রকৌশলী রথীন্দ্রনাথ হালদার জানান, এ সড়কটিতে প্রচুর যানবাহন মানুষের চলাচল। যানবাহনের চাকার ঘর্ষণের ফলে অনেক জায়গায় পিচ কমবেশি গলেছে। সাধারণত এ সড়কে ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে রাস্তাটিতে প্রয়োজনের তুলনায় বিটুমিন বেশি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তীব্র দাবদাহের কারণে এমনটি ঘটেছে। এটা শুধু এই উপজেলায় নয়, দেশের আরও কয়েকটি জেলার মহাসড়কেও এমন ঘটনা ঘটেছে। এদিকে বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, নওগাঁর বদলগাছীতে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে জনজীবন ও পশু পাখি অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বোরো ধানসহ মাঠেই পুড়ছে কৃষকদের ক্ষেতের ফসল। দীর্ঘদিন কোনো বৃষ্টি না হওয়ার কারণে কৃষকের ধান, পাট, পটোলসহ বিভিন্ন ফসল মাঠেই নষ্ট হচ্ছে তাদের স্বপ্ন। কৃষকরা বলছেন, 'আমাদের এই এলাকা ধান, পাট, পটোলসহ বিভিন্ন ফুলের ফসলের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে মাঠেই আমাদের কপাল পুড়ছে। একদিকে অতিরিক্ত তাপদাহে মানুষ অতিষ্ট হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে গবাদি পশু-পাখি ও মাঠের ফসল পুড়ে যাচ্ছে। খরা ও দাবদাহের কারণে গভীর নলকূপসহ বাসাবাড়ি মোটরগুলোতেই পানি কম উঠছে। ফলে খাবার ও প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। দাবদাহের কারণে মাঠে ফসলের জমিতে কাজ করা যাচ্ছে না। তীব্র দাবদাহে ঝরে যাচ্ছে গাছের আম ও লিচু। কলার বোটা শুকিয়ে ঝরে পড়ে যাচ্ছে। বলুভরা ইউপির ঢেকরা গ্রামের খাজা মদ্দীন, রশিদ, মস্তাকিনসহ অনেকে বলেন, এ উপজেলার ফুলের ক্ষেতের ওপর নির্ভরশীল কৃষকরা। কিন্তু কয়েক দিনের গরমে পটোল, বেগুন, পাটের অধিকাংশ চারা শুকিয়ে মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান বলেন, বর্তমানে যে দাবদাহ শুরু হয়েছে আম, লিচু, কলা ও বোরো ধানের গোড়ার সেচ দিতে হবে। তাছাড়া আমরা কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। বদলগাছীতে এবার ১১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। নিয়ম অনুসারে ধানের গাছের গোড়ায় ৪ ইঞ্চি পানি বেধে রাখতে হবে। বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. কানিস ফারহানা বলেন, অতিরিক্ত দাবদাহের কারণে ছোট বাচ্চা ও বৃদ্ধদের বেশি সাবধান থাকতে হবে এবং পানি পান করতে হবে বেশি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে