বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

তিতাসে ২৩ বছর ধরে বন্ধ সেতুর নির্মাণকাজ ভোগান্তিতে ৫ গ্রামের মানুষ

তিতাস (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
তিতাসে ২৩ বছর ধরে বন্ধ সেতুর নির্মাণকাজ ভোগান্তিতে ৫ গ্রামের মানুষ
কুমিলস্নার তিতাসে বারামবাড়ি সংলগ্ন খালের উপর ২৩ বছর আগে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া সেতু -যাযাদি

কুমিলস্নার তিতাসে নারান্দিয়া ইউনিয়নের নয়াচর গ্রামের খালের উপর রাজনীতি প্রতিহিংসার কারণে প্রায় ২৩ বছর যাবৎ বন্ধ সেতুর নির্মাণকাজ। অর্ধনির্মিত সেতুর উভয়পাশে রাস্তা নির্মাণের টেন্ডার হলেও ঠিকাদার কাজ শুরু না করায় শেষ হয়েছে মেয়াদ। নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এবং উভয়পাশে রাস্তা না থাকায় নারান্দিয়া ও ভিটিকান্দি ইউনিয়নের প্রায় ৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের আসমানিয়া বাজার থেকে রায়পুর সড়কের সুইচ গেইট থেকে নয়াচর হয়ে বারামবাড়ি ও আরামবাড়ি হয়ে খলিলাবাদ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার কাঁচা সড়ক রয়েছে। সড়কের আড়াই কিলোমিটার নির্মাণে গত বছর টেন্ডার আহ্বান করে এলজিইডি। দুই ভাগে বিভক্ত কাজের প্রথম অংশে দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৪৫ হাজার ১৪২ টাকা এবং দ্বিতীয় অংশ ১ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে ১ কোটি ৩১ লাখ ৬২ হাজার ৭২৫ টাকার টেন্ডার হয়। মেসার্স সাজিদ ট্রেডার্স কাজ দুটির দায়িত্ব পায়। তবে এ বছরের ২৭ জুন প্রথম অংশ এবং ৯ এপ্রিল দ্বিতীয় অংশের কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সড়কের মধ্যে খলিলাবাদ বারামবাড়ি এলাকায় খালের উপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠালেও সেটি বাতিল হয়।

সরেজমিন জানা যায়, রায়পুর থেকে আসমানিয়া বাজার সড়ক থেকে স্স্নুইচ গেইট থেকে নয়াচর হিরা লালের বাড়ি পর্যন্ত মেকাডম পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণকাজ হয়েছে। এরপর গত ৪ মাস ধরে এ অংশের কাজ বন্ধ রয়েছে। পরের এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ শুরু করেনি ঠিকাদার। কোনো কাজ ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। খলিলাবাদ বারামবাড়ি খালের উপর ২০০১ সালে খালের উপর একটি সেতু নির্মাণে টেন্ডার আহ্বান হয়। কাজটি পান মেসার্স এসএন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদার সেতুর চারটি পিলারের নির্মাণকাজ শেষ করার পর সরকার পরিবর্তন হলে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। এর পরের দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন এ পথের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন।

খলিলাবাদ গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি হারুন-উর-রশিদ বলেন, '২০০১ সালে বারামবাড়ি খালের উপর সেতু নির্মাণের কাজটি আমার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসএন এন্টারপ্রাইজ বাস্তবায়ন করছিল। ওই সময় জাতীয় নির্বাচনে সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলের পরিবর্তন হওয়ায় কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ ২৩ বছর সেতুটি অর্ধ নির্মিতাবস্থায় পড়ে আছে।' নয়াচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সাম্মি আক্তার বলেন, 'খলিলাবাদের বারামবাড়ি পর্যন্ত আমাদের স্ক্যাচম্যাপ এরিয়া। খালে সেতু না থাকায় এবং রাস্তা ভালো না হওয়ায় ওই এলাকার শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না।'

নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান খোকা বলেন, স্স্নুইচ গেইট থেকে দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের অবশিষ্ট কাজ শিগগিরই শুরু হবে। বাকি এক কিলোমিটার রাস্তার কাজ বর্ষার পানি আসায় করা সম্ভব হয়নি। তবে সেতু নির্মাণ জরুরি।

এ বিষয়ে জানতে মেসার্স সাজিদ ট্রেডার্সের মালিক মোয়াজ্জেম হোসেনের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রথম অংশের দেড় কিলোমিটার রাস্তার ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এই অংশ ও পরের এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। বারামবাড়ি সংলগ্ন খালের উপর সেতুর প্রস্তাব পুনরায় এবং বাকি প্রায় ৮শ মিটার রাস্তা নির্মাণের প্রস্তাবও পাঠানো হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে