নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কুলস্নাগড়া ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকা থেকে বন বিভাগের শাল-গজারি গাছ কেটে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ রয়েছে, বিট কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে চলছে গাছ কাটা। তবে বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন দুর্গাপুর বন কর্মকর্তা দেওয়ান আলী।
স্থানীয়রা জানান, দুর্গাপুর উপজেলার কুলস্নাগাড় ইউনিয়নের বিজয়পুর, মাইজপাড়া ও মাধবপুর এলাকায় রয়েছে বন বিভাগের বিশাল সেগুন ও গজারি বাগান। প্রতিবছর বর্ষা ও শীতে বিভিন্ন অজুহাতে কাটা হয় বাগানের গাছ। তবে অধিকাংশই বন বিভাগের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হয়ে থাকে। এ বছরও বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে কাটা গাছগুলো কিনেছেন ডাকুমারা এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী শাহআলম ও দুলাল মিয়া। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মাইজপাড়া এলাকার বাগান থেকে বেশ কিছু শাল-গজারি গাছ কেটে ডাকুমারা এলাকায় এক করাত কলের পেছনে এনে রাখেন শ্রমিকরা। এছাড়া মাধবপুর গ্রামের আব্দুল করিমের বাড়ির সামনে এনে রাখা হয়েছে বেশ কিছু সদ্যকাটা গজারি গাছ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গাছকাটা শ্রমিক জানান, তিন দিন ধরে পাঁচজনে মিলে প্রায় ৫০টি গাছ কেটেছেন। বিভিন্ন বাগান থেকে বাকি আরও ৫০টির মতো গাছ কাটবেন। রাতের আঁধারে গাছগুলো কেটে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে রাখা পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব। আরেক গ্রম্নপ রয়েছে ওই বাড়িগুলো থেকে নদীর পাড়ে এনে দেয়। পরে গাড়িতে করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়।
কাকড়াকান্দা গ্রামের সমাজকর্মী আমিনুল ইসলাম বলেন, রাতের অন্ধকারে প্রায় সময়ই সরকারি সেগুন-গজারি গাছ কাটা হয়। গাছগুলো কেটে করাত কলে সাইজ কাঠ বানিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়। এই গাছ কাটার সঙ্গে বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত আছেন। বন বিভাগের লোকদের জিজ্ঞেস করলে তারা ওয়াকশনের গাছ কাটা হচ্ছে বলে জানান। ডাকুমারা এলাকার করাত কলের মালিক ফরিদ আলী বলেন, 'বৃহস্পতিবার সকালে করাত কলে আসার সময় ডাকুমারা এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী শাহআলম ও দুলাল বেশ কিছু গজারি গাছ ঠেলাগাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি বাঁধা দেই এবং পরবর্তিতে বন কর্মকর্তা, স্থানীয় সাংবাদিক এবং এলাকাবাসীকে অবগত করি।' কাঠ ব্যবসায়ী সাহালমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সরকারি গাছ ক্রয়ের কথা অস্বীকার করেন।
দুর্গাপুর বন কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, 'বিষয়টি আগে জানতাম না। ঝড়ে পড়ে গিয়েছিল এমন কিছু গাছ কেটে দুর্গাপুর রেঞ্জ অফিসে আনার কথা ছিল। গাছ কাটার বিষয়টি জানার পর গাছ কাটতে বিট অফিসার আব্দুর রহিমকে নিষেধ করে দিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।'