বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

বালাগঞ্জে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে কুশিয়ারা ডাইক

ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি
  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বালাগঞ্জে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে কুশিয়ারা ডাইক
সিলেটের বালাগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর তীর ধ্বসে পড়ায় ঝুঁকিতে থাকা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ -যাযাদি

সিলেটের বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুরে কুশিয়ারা নদীর তীর ধ্বসে পড়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কুশিয়ারা ডাইক ও একটি কালভার্ট। এমনিতেই নদীপাড়ের বাসিন্দাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম ভাঙন। বর্ষাকালে নদী ভাঙন স্বাভাবিক হলেও এ বছর তা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। গত বুধবার ফাজিলপুর নদী তীরের বড় একটি অংশ ধ্বসে পড়লে বাঁধের ওপর নির্মিত একটি কালভার্টের পাশের মাটিও ধ্বসে যায়। এর আগে ফাজিলপুর এলাকায় বড় ধরনের নদী ভাঙন দেখা দেওয়ার পর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালিভর্তি জিওব্যাগ স্থাপন করে দেয়। এলাকাবাসীর দাবি সেই কাজ তেমন ভালো হয়নি। যতগুলো জিওব্যাগ দেওয়ার কথা ছিল ততটি দেওয়া হয়নি। বর্তমানে নেওয়া ২৫ লাখ টাকার প্রকল্পের কাজ যেন যথাযথভাবে হয় তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বালাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ওসমানীগরের শেরপুর পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর এলজিইডি তৈরি করেছে পাকা সড়ক। যে সড়ক দিয়ে দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ যানবাহনে চলাচল করে থাকেন। নদীর বালাগঞ্জ অংশের ফাজিলপুর এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় অনেক জায়গায় নদীর তীর বাঁধের কাছে চলে এসেছে। এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে সড়কটিও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সড়কটি ভেঙে গেলে বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

স্থানীয়রা জানান, কুশিয়ারা নদীর বালাগঞ্জ অংশের ফাজিলপুর নদী তীরের অনেক জায়গা ভেঙে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাছে চলে এসেছে। এরই মধ্যে গত বুধবার বাঁধ সংলগ্ন তীরটির বড় একটি অংশ ধ্বসে পড়লে বাঁধের ওপর নির্মিত সড়কের কালভার্টের পাশের মাটি ধ্বসে যায়। এমন অবস্থায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।

এদিকে নদী ভাঙনের খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার মাটি ধ্বসে পড়া স্থান পরিদর্শন করেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ। ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন এলাকাবাসীকে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপসহকারী প্রকৌশলী গোলাম বারি।

জানা যায়, ফাজিলপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে আসছে এলাকাবাসী। বুধবার যে স্থানটি ভেঙেছে গত বছরও সেখানে এক ব্যক্তির বসত ঘর ছিল। নদী ভেঙে সড়কের কাছে চলে আসায় এলাকাবাসী খুবই আতঙ্কিত। যদি সড়কটি ভেঙে যায় তবে তারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন।

মিনাজ মিয়া নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, যে স্থানটি ভেঙেছে সেখানে তার চাচার ঘর ছিল। ভাঙনের কবলে পড়ে চলতি বছর ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরে যেতে হয়েছে। বর্তমানে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে তাতে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং তা রোধে তাৎক্ষণিক ২৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই জিওব্যাগ ও টিউবব্যাগ স্থাপনের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। নদীর ভাঙন রোধে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ১১০ কিলোমিটার চর কাটার একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে