বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২

ঈশ্বরদীতে ৯২০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ঈশ্বরদীতে ৯২০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ
পাবনার ঈশ্বরদীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত চাষিরা -যাযাদি

মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে পাবনার ঈশ্বরদীর চাষিদের জুড়ি মেলা দায়। তার সঙ্গে এবার বাড়তি প্রেরণা জুগিয়েছে দেশের বাজারে বছর জুড়ে পেঁয়াজের হাহাকার। সেই সঙ্গে দামের ঊর্দ্ধমুখিতা। সব মিলিয়ে পুরো উপজেলার মাঠ জুড়ে চলছে পেঁয়াজ চাষের মহোৎসব। বৈরী আবহাওয়াজনিত কারণে আগাম পেঁয়াজ চাষিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে নাবি পেঁয়াজ রোপণ করেছেন অনেকেই। তবে উপজেলা কৃষি অফিসের অসহযোগিতা মৌসুমি পেঁয়াজ চাষিদের সফলতার পথে সবচেয়ে বড় বাধা বলে অধিকাংশ কৃষকই মনে করছেন।

উপজেলার লক্ষ্ণীকুন্ডা, কৈকুন্ডাসহ প্রমত্তা পদ্মার বিস্তীর্ণ চর, ভাড়ইমারী, সিলিমপুর, নওদাপাড়া এলাকা ঘুরে পেঁয়াজ চাষিদের নানা কর্মযজ্ঞ দেখা যায়।

পেঁয়াজের মাঠে কাজ করা শ্রমিক মজিদ মিঞা বলেন, পেঁয়াজের মৌসুমে আমাদের কদর একটু বেশিই থাকে। কারণ পেঁয়াজ অত্যন্ত নরম জাতীয় ফসল। তাই একে অতি আদরের সঙ্গে বাড়তি সময় নিয়ে আগাছা পরিষ্কারসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়। নইলে গাছ নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় আমরা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মজুরি নিয়ে থাকি।

পেঁয়াজ চাষিদের তথ্যমতে, পেঁয়াজ রোপণ থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সময় লাগে ৬০-৭০ দিন। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় ৫০-৬০ মণ হারে পেঁয়াজ পাওয়া যায়। আবার প্রতি বিঘায় উৎপাদন ব্যয় হয় প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।

কৃষক মাহাবুব বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার পেঁয়াজ চাষে খরচ বেশি হয়েছে। কেননা ৫-৬ হাজার টাকা মণের পেঁয়াজের বীজ এবার তা কিনতে হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায়। আবার সব ধরনের সারের বস্তা প্রতি তিন থেকে সাড়ে তিনশ' টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে। কীটনাশকেও একই অবস্থা।

পেঁয়াজ চাষি পিংকু বলেন, এবার ৪০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। পেঁয়াজ চাষসহ কয়েক রকমের ফসল আছে তার। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের সুপরামর্শ বা সহযোগিতা পাননি। তবে চাষ করা পেঁয়াজের বাজারমূল্য তিন হাজার টাকার কমে বিক্রি করলে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে তাকে।

লিটন বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে এবার ফসল নষ্ট হয়েছে বেশি। পেঁয়াজে ফুফরি নামক রোগ আক্রমণ করছে। কৃষি অফিসের সহযোগিতা না পেয়ে স্থানীয় কীটনাশক বিক্রেতাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ফসলে বালাইনাশকসহ সার প্রয়োগ করছেন। এতে তাদের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে।

পেঁয়াজ চাষি ভুট্টু বলেন, এবার মোট ১০ বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছেন। রোগবালাইয়ের কারণে দুঃশ্চিন্তায় ভুগছেন। সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমূখী থাকায় খরচের হার এবার বেশি। তারপর সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো ভর্তুকি নেই। নেই কোনো সময়োপযোগী পরামর্শদাতা ও সহযোগিতা।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, ঈশ্বরদীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হচ্ছে। এবার উপজেলার কৃষকরা ৯২০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করছেন। গ্রীষ্ম ও শীতকালীন পেঁয়াজচাষে প্রণোদনা দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এবার পেঁয়াজের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তার আশা কৃষকরা লাভবান হবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে