আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে নব্য সংকটে গত তিন দিন ধরে ফের ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকার এ গুরুত্বপূর্ণ রুটে ফেরি চলাচল সচল রাখতে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে। এরপরও নব্য সংকট দূর করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাই গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ফেরি চলাচলে অচলতা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে তিনদিন ধরে পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল।
আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে নাব্য সংকটের কারণে গত প্রায় আড়াই মাস ধরে বিআইডবিস্নউটিএ'র ড্রেজিং ইউনিট ড্রেজিং কাজ শুরু করে। এর পরও এ রুটে ফেরি চলাচল ব্যহত হওয়ায় প্রতিদিন ঘাট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
আরিচা বিআইডবিস্নউটি'র অফিস সূত্রে জানা গেছে, নৌ-রুটে বড় ফেরি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে ৮ থেকে ৯ ফুট পানির প্রয়োজন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে পলি এসে ফেরি চলাচলের চ্যানেল ভরে যাওয়ায় এখন এ নৌ-রুটের চ্যানেলে পানির গভীরতা কমে গেছে। আরিচা ফেরিঘাটের বেসিনে নাব্য সংকটের কারণে গত ২৮ জুলাই থেকে একটি ড্রেজার দিয়ে পলি অপসারণ করা হয়। এদিকে অ্যাপ্রোচ চ্যানেলসহ আরিচা ৪ ও ৩ নম্বর ফেরিঘাটের বেসিনে নাব্য সংকট দেখা দেওয়ায় ঘাটে ফেরি ভিড়তে পারছে না। এ কারণে ৬ ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করা হচ্ছে। আরিচা-কাজীরহাট নৌরুট দেশের গুরুত্বপুর্ণ ঘাট। এ ঘাট রাজধানীর সঙ্গে পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের নৌ-যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা। কিন্তু আরিচা-কাজীরহাট ঘাট দুটি এতো গুরুত্বপুর্ণ হওয়া সত্ত্বেও সারা বছরই একটা না একটা সমস্যা লেগেই থাকে। এ নৌ-রুটে বর্ষা মৌসুমে নদীতে স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল বিঘ্ন, শুষ্ক মৌসুমে নদীতে নাব্য সংকটের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত ও শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ এবং ফেরি স্বল্পতা থাকাসহ নানা সমস্যার কারণে আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে চলাচলকারী দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল জেলার কয়েক হাজার যাত্রীকে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে ফেরি চলাচল করতে না পারায় ঘাট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকার গাজীপুর থেকে ছেড়ে আসা পাবনার সুজানগরগামী ট্রাকচালক মজিদ মোলস্না জানান, গত শুক্রবার রাত ১২টায় আরিচা ঘাটে আসেন। রোববার পর্যন্ত তিনদিন ধরে ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছেন। এ রকম অনেক পণ্যবাহী ট্রাক ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
আরিচা অফিসের বিআইডবিস্নউটিএ'র ড্রেজিং ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আহম্মদ জানান, আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটের অ্যাপ্রোচ চ্যানেল ও ফেরিঘাটের বেসিনে নাব্য সংকটের কারণে আরিচা ঘাটের বেসিনে দুটি ড্রেজার ও অ্যাপ্রোচ চ্যানেলে ৪টি ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং করে চ্যানেল সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ২৮ জুলাই থেকে এ ঘাট এলাকায় ড্রেজিং শুরু হয়। এবার আরিচা-কাজীরহাট ও বাঘাবাড়ী নৌরুটে নৌ চলাচল সচল রাখতে ৩৮ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৩ দশমিক ৬০ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হয়েছে। আরিচা অফিসের বিআইডবিস্নউটিসি'র ডিজিএম নাছির উদ্দিন জানান, আরিচা ঘাটে ও অ্যাপ্রোচ চ্যানেলে নাব্য সংকটের কারণে ফেরি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে বিআইডবিস্নউটিএ কর্তৃপক্ষ ড্রেজিং করছে। এ ছাড়া এ নৌ-রুটের চ্যানেলে পানির গভীরতা দিনদিন কমে আসছে।
উলেস্নখ্য, শুক্রবার রাত ৮টা থেকে রোববার পর্যন্ত আরিচা-কাজীরহাট নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে গত কয়েকদিন ধরে ঘাট এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ফেরি পারপারে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।