ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমির নিজস্ব জায়গায় গড়ে ওঠা ২৬টি দোকান ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে ভাড়া পাচ্ছে ৫৪ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা করে। বিগত ৩৫ বছর (প্রায় ৩ যুগ) ধরে এভাবেই দোকান ভাড়ার টাকা পাচ্ছে ওই মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাও বাকি পড়ে রয়েছে। নামমাত্র দোকান ভাড়া দেখিয়ে ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে আঁতাত করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত অসাধু চক্র। তবে বছরের পর বছর নামমাত্র ভাড়া দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে ঠকানোর বিষয়ে কেউই মুখ খুলতে নারাজ।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে, বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমি (মাধ্যমিক বিদ্যালয়) ৮ একর জমি নিয়ে ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। উপজেলার সর্বদক্ষিণে সিংরইল ইউপির বাকচান্দা বাজারের উত্তরপাশে নিজস্ব বিশাল মাঠের উত্তর পাশে বিদ্যালয়টির অবস্থান। বাজারের পশ্চিমপাশে প্রধান সড়কের দুই পাশে বিদ্যালয়ের জায়গায় ১৯৮৮-১৯৮৯ সালে স্থানীয়রা অনুমতি নিয়ে ২৬টি দোকান নির্মাণ করে। সর্বোচ্চ ৮১০ ও সর্বনিম্ন ১৮৯ বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট পাকা মেঝে টিনের বেড়ার এসব দোকানে কেউ কেউ নিজেরা ব্যবসা করছেন। কেউ আবার ৫ বছর মেয়াদের জন্য মোটা অংকের সিকিউরিটি মানি (নিরাপত্তাবন্ধক) নিয়ে অন্যকে দেড় থেকে ২ হাজার টাকায় মাসিক ভাড়া দিয়ে রেখেছেন; কিন্তু সিকিউরিটি মানি দখলদাররাই নিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে প্রতিটি দোকান দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করে মাসিক ভাড়া আদায় করলেও ঘর মালিক বিদ্যালয়কে প্রতিটি দোকানের মাসিক ভাড়া দিচ্ছেন ৫৪ থেকে ১০৮ টাকা। তার ওপর প্রতিটি দোকানেরই আবার মাসিক ভাড়া মোট ৬৩ হাজার ১২ টাকা বাকি পড়ে আছে। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে এ অনিয়ম চলে এলেও কর্তৃপক্ষ এর কোনো সুরাহা করতে পারছেন না। স্থানীয় এসব ব্যবসায়ীর বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও মাসিক ভাড়া বাড়াতে বা তাদের উচ্ছেদ করতে পারছে না বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানের ১১নং দোকানের মালিক নজরুল ইসলাম জানান, তিনি বিদ্যালয়ে মাসিক ভাড়া বাবদ দেন ৮০ টাকা। অথচ তিনি ৫০ হাজার টাকা সিকিউরিটি নিয়ে সোপান আলীর কাছ থেকে প্রতিমাসে ১ হাজার ৭০০ টাকা ভাড়া দিচ্ছেন। এ রকম প্রত্যেকটি দোকান মালিক ও ভাড়াটিয়াদের একই অবস্থা। বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ির রফিকুল ইসলাম জানান, এখানে দোকান করে ভাড়া নিয়ে যা হচ্ছে তা ঠিক নয়। অভিভাবক বাবুল মিয়া বলেন, আমরা কী বলব, দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলে আসছে।