টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়ন পরিবার ও পরিকল্পনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে দেখা যায় ময়লার ভাগাড়। ফলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিজেই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয় বড়চওনা হাটবাজারের ময়লা-আবর্জনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আশপাশে ফেলা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। যে কারণে দুর্গন্ধে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ আর ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীসহ চিকিৎসক ও স্থানীয়দের।
হাসপাতাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বড়চওনা হাটের ব্যবসায়ীরা ঝুড়িভর্তি ময়লা-আবর্জনা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একেবারে কাছে রেখে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও ওই বাজারের হাটের দিনের ব্যবসায়ী ও বাজার পরিষ্কার করা উচ্ছিষ্ট ময়লাও সেখানে ফেলছেন। যে কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে জমেছে ময়লার স্তূপ। ময়লার স্তূপে পলিথিন ও ডাবের খোসায় পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। জমে থাকা পানিতে এডিশ মশার জন্ম হয়। সাধারণ রোগীরা বলছেন, রোগ সারাতে এসে সুস্থ মানুষেরও এখানে রোগী হয়ে যাওয়ার অবস্থা।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে ময়লা ফেলার কারণে এখান থেকে দুর্গন্ধ ও রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধে পাশের রাস্তা দিয়েও চলাচল করা যায় না। ময়লা দ্রম্নত অপসারণ না করা হলে অবস্থা আরও খারাপ হবে। চিকিৎসা নিতে আসা রমেছা বেগম জানান, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এখানে ময়লার ভাগাড় সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনিটরিং করলে এমনটা হতো না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশের ব্যবসায়ীরা জানান, হাসপাতালের সামনে এমন ময়লার ভাগাড় চিন্তাই করা যায় না। ময়লার কারণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে কেউ এক মিনিটও দাঁড়াতে পারেন না। ব্যবসায়ীরাও ঠিকমতো ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যেভাবে দিনকে দিন ময়লা ফেলা হচ্ছে তাতে ব্যাপক হারে মশার বংশবিস্তারসহ ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের ফলে এখানে আগতদের মধ্যে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন বায়ুবাহিত রোগবালাই ছড়ানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও নতুন করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন।
বড়চওনা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুক, এখানে এসে মানুষ দুর্গন্ধমুক্তভাবে চিকিৎসা নিক আমিও চাই। তবে বিকল্প কোনো জায়গা না থাকায় বাজারের ময়লা ফেলা হচ্ছে। শিগগিরই এসব ময়লা অপসারণ করা হবে।
বড়চওনা হাটের ইজারাদার আবু সাঈদ মিয়া বলেন, অন্যত্র ময়লা ফেলার জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে ময়লাগুলো খুব দ্রম্নতই অপসারণ এবং পুড়িয়ে ফেলা হবে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আশিকুর রহমান বলেন, 'এ ব্যাপারে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় যেন তেনভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই লোকজন ময়লা ফেলে যাচ্ছেন। এছাড়াও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে সিএনজি, ইজিবাইক-অটোবাইক আড়াআড়িভাবে রাখায় এখানে চলাচলেও দারুণ ব্যাঘাত ঘটে।'
সখীপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাশাহেদ হাসান বলেন, বিষয়টি জেলা ও উপজেলা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে থাকা জায়গাটি ময়লার স্তূপে পরিণত হওয়ায় আশপাশের এলাকাজুড়ে ব্যাপকভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। যার ফলে ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীসহ জনসাধারণের।