কক্সবাজারের চকরিয়ায় প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙালী পরিবারের মালিকানাধীন এক কানি জমি জবর-দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৌহিদুল ইসলাম ফরহাদসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
দখলে নেওয়ার পর ওই জমিতে ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী নেছারা বেগম বাদী হয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের বার আউলিয়া নগর এলাকার ওই জমির দখল নেওয়া হয় বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে। এরপর থেকে বেশকিছু সশস্ত্র লোকজনের পাহারা বসিয়ে ওই জমিতে ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে বলে থানায় করা অভিযোগে উলেস্নখ করা হয়েছে।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছে- চকরিয়ার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙালীর ছেলে খাদ্য অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক পদে কর্মরত জিয়াউল করিম মো. তারেক প্রায় ২০ বছর আগে কাকারা ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের বার আউলিয়া নগর এলাকায় বিএস ৮৫৩ নম্বর খতিয়ানের ১৫০১ নম্বর দাগ থেকে ৪০ শতাংশ (এক কানি) জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে এই জমির বিএস ৩২০১ নম্বর খতিয়ান সৃজিত হয়। এর পর থেকে ওই জমিতে ধানসহ রকমারি ফসলের আবাদের মাধ্যমে ভোগ-দখলে রয়েছেন।
প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান বয়োবৃদ্ধা নেছারা বেগম অভিযোগ করেছেন- 'রুস্তম আলী চৌধুরী পাড়ার সিরাজ সওদাগরের কাছ থেকে সাফকবলা দলিল মূলে এক কানি জমি ক্রয়ের পর বিগত ২০ বছর ধরে ভোগ-দখলে ছিলেন তারা। কিন্তু দেশের পটপরিবর্তনের কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হওয়ায় ওই জমি সম্প্রতি জবর-দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায় একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্থানীয় তৌহিদুল ইসলাম ফরহাদের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটার দিকে সদলবলে গিয়ে ওই জমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানে সশস্ত্র পাহারা বসিয়ে ক্রয়কৃত পুরো জমিতে ধানের চারা রোপণ করার মাধ্যমে দখল করে নেয় জবর-দখলকারী ওই সিন্ডিকেট। '
অভিযোগে আসামি করা হয়েছে- ইউনিয়নের মৌলবি জমির উদ্দিনের ছেলে তৌহিদের দুই বড় ভাই ছুট্টু ও বাবুকে। এছাড়াও রুস্তম আলী চৌধুরী পাড়ার মৃত হাজী নুরুল কবিরের ছেলে ইউসুফকেও আসামি করা হয় অভিযোগে।
নেছারা বেগম বলেন, বিষয়টি থানার ওসিকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। এর পর লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য একজন অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু জবর-দখলকারীরা সেখানে সশস্ত্র পাহারা বসানোর কারণে তারা ঘেঁষতে পারছেন না জমির কাছে। এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াছিন মিয়া বলেন, 'বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জায়গা দখলে নিয়ে ধানের চারা রোপন সংক্রান্তে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৌহিদুল ইসলাম ফরহাদ। তিনি দাবি করেন জমিটির প্রকৃত মালিককে প্রয়োজনে লাগিয়তের টাকা যাতে পায় সে ব্যবস্থা করবেন।