শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
শেরপুরে বাকপ্রতিবন্ধীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার তিন জেলায় গৃহবধূসহ আরও তিনজনের মৃতু্য

রায়পুরে চুরির অপবাদ দিয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

স্বদেশ ডেস্ক
  ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
রায়পুরে চুরির অপবাদ দিয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
রায়পুরে চুরির অপবাদ দিয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

লক্ষ্ণীপুরের রায়পুরে চুরির অপবাদ দিয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, শেরপুরে বাকপ্রতিবন্ধী যুবতীর গলাকাটা মরদেহ ও দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর এবং মৌলভীবাজারের মাধবপুর থেকে গৃহবধূসহ আরও তিন লাশ উদ্ধার হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-

রায়পুর (লক্ষ্ণীপুর) প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্ণীপুরের রায়পুর উপজেলার কাঞ্চনপুর এলাকায় ব্যাটারী চুরির অপবাদ দিয়ে এক যুবককেকে তুলে নিয়ে রাতভর পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সকালে কাঞ্চনপুর করিম উদ্দিন বেপারি বাড়ী সংলগ্ন সিরাজ ও নান্নু পাটওয়ারীর সুপারি বাগানে তার লাশ পাওয়া যায়। নিহত তরুণের নাম আবুল কালাম (৩২)। তিনি উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত ছানা উল্যা পাটওয়ারীর ছেলে।

1

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে উপজেলার কাঞ্চনপুর থেকে মাসুদ আলমের অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি হয়। পরে রোববার বিকেলে ভুঁইয়ার রাস্তায় একটি দোকানে চুরি হওয়া ব্যাটারি বিক্রির সময় নিশান নামে এক যুবককে আটক করে স্থানীয়রা। নিশান জানায়, আবুল কালামসহ আরও কয়েকজন এই চুরির সঙ্গে জড়িত। এরপর স্থানীয়রা নিশানকে মারধর করে ছেড়ে দেয়।

রোববার গভীর রাতে মাসুদ আলমের নেতৃত্বে ৫-৬ জন যুবক আবুল কালামকে উপজেলার হায়দারগঞ্জের বাংলা বাজার থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে আসে। পরে কাঞ্চনপুর এলাকায় সুপারি বাগানে গাছের সঙ্গে বেঁধে তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নেওয়ার পথে আবুল কালামের মৃতু্য হয়।

নিহতের স্ত্রী রেহানা বেগম ও মা রোশন আক্তার অভিযোগ করেন, গভীর রাতে মাসুদ আলমের নেতৃত্বে তাদের স্বজনকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। যদি সে চুরির সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হওয়া উচিত ছিল। এভাবে পিটিয়ে হত্যা কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। তারা এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

শেরপুর প্রতিনিধি জানান, শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের সাহাব্দীরচর দশানীপাড়া গ্রাম থেকে সোমবার সাদিয়া বেগম (১৮) নামে এক বাকপ্রতিবন্ধী যুবতীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেে পুলিশ। নিহত সাদিয়া সদর উপজেলার সাহাব্দীচর গ্রামের জনৈক জামাদার মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।

জানা গেছে, সদর উপজেলার সাহাব্দীরচর গ্রামের কমর আলীর ছেলে জামাদার মিয়ার সঙ্গে তার ভাইসহ একই গোষ্ঠীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এদিকে গত রোববার রাতের কোন এক সময় বাকপ্রতিবন্ধী সাদিয়াকে তাদের বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে কে বা কারা কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে তার বাবা জামাদার মিয়ার ক্ষেতে ফেলে রেখে যায়।

পরদিন সোমবার সকালে এলাকাবাসী সাদিয়ার লাশ দেখতে পেয়ে পরিবারকে খবর দেয়। পরে শেরপুর সদর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে লাশের সূরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

উপ-পরিদর্শক (এসআই) তারেক জানান, এ ঘটনার পর থেকে তার মা ছাড়া বাবা ও পরিবারের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছে। তবে সাদিয়ার হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার সাখাওয়া নদী থেকে এক অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত রোববার বিকেলে খবর পেয়ে পুলিশ আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে।

জানা গেছে, উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বাসুপাড়া ও সর্দার পাড়ার মাঝা-মাঝি সাখাওয়া নদীর সুইস গেটের পানিতে অর্ধ ডুবন্ত অবস্থায় এক যুবকের লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ওই যুবকের বয়স অনুমানিক ৩৫ বছর। তার পরনে জিন্সের প্যান্ট ও ছাই রঙ্গের গেঞ্জি ছিল। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, নাটোরের গুরুদাসপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে জামেলা (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা নারীর মৃতু্য হয়েছে। সোমবার উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের খাকরাদহ পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃতু্যর বিষয়টি নিশ্চিত করে গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, বৃদ্ধা জামেলা দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সোমবার তিনি প্রতিবেশির পুকুরে গোসল করতে নামেন। কিছুক্ষণ পরে পুকুরে মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। বৃদ্ধা জামেলার স্বাভাবিক মৃতু্য হওয়ায় কোন মামলা হয়নি।

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরশহরের গুমিটিয়া গ্রামে আছমা আক্তার (৩২) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি গুমুটিয়া গ্রামের প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। খবর পেয়ে থানার এস আই মিজানুর রহমান লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে পাঠিয়েছেন।

জানা যায়, গত রোববার দিবাগত রাতে আছমা রাতের খাবার খেয়ে তার শিশু সন্তনকে নিয়ে রুমে ঘুমাতে যান। সকালে পরিবারের লোকজন ডাকাডাকি করে। কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে পাঠায়। থানার ওসি আব্দুলস্না আল মামুন জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে