বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

হোসেনপুরে কুয়াশায় ঝরে যাচ্ছে পান, ক্ষতির শঙ্কায় চাষি

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
হোসেনপুরে কুয়াশায় ঝরে যাচ্ছে পান, ক্ষতির শঙ্কায় চাষি

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ঘন কুয়াশার কারণে ঝরে যাচ্ছে পানপাতা। ধার দেনা এবং এনজিও ঋণ নিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করে বরজ করার পর শীত মৌসুমের শুরুতেই শ্রমে ফলানো পানপাতা এভাবে ঝড়ে যাওয়ায় ক্ষতির শঙ্কায় পান চাষিরা।

জানা গেছে, শীত মৌসুমের শুরুতে ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও গত কয়েক দিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ এবং ঘন কুয়াশার কারণে বরজের পানপাতা লাল হয়ে ঝড়ে যাচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহ এবং কুয়াশার হাত থেকে পান চাষিরা তাদের রক্ষার জন্য পুরো বরজ পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়ার পরও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। লাখ লাখ টাকা খরচ করে এক এক জন পান চাষি বরজ তৈরি করেছেন। নিজেদের চোখের সামনে এভাবে বহু ঘামে শ্রমে তৈরি করা তাদের পানের বরজের পাতা চোখের সামনে লাল হয়ে ঝড়ে যেতে দেখায় অনেক চাষি কান্নায় ভেঙে পরেন।

সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের মধ্য গোবিন্দপুর, উত্তর গোবিন্দপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে দেখা গেছে, পান বরজের বিবর্ণ চিত্র। বরজের সঙ্গে পানের লতা দাড়িয়ে থাকলেও ঠান্ডায় পাতা শুকিয়ে লাল হয়ে ঝড়ে মাটিতে পড়ে আছে। জিনারী ইউনিয়নের পান চাষি আবদুল হাই বলেন, 'ধার দেন করে জমিতে পান চাষ করেছি। শীত আর কুয়াশায় বরজের সব পান পাতা লাল হয়ে শুকিয়ে ঝড়ে পড়েছে।' একই গ্রামের মিনহাজ বলেন, 'এনজিও থেকে লোন লইয়া ৫ লাখ টাকা খরচ করে ৪০ শতাংশ জমিতে পান চাষ করছি। শীত আর কুয়াশায় সব শেষ অইয়া গেছে। পাতা সব ঝর্ইযা নষ্ঠ হইয়া গেছে। এনজিওর কিস্তি দিমু ক্যামনে চিন্তায় আছি।'

বরজের পান নষ্ট হওয়ায় তার প্রভাব পরেছে বাজারেও। পান বাজারে দেখা গেছে, এক চলিস্ন (৪০টি পান) বড় সাইজের বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকায়। ছোট সাইজের এক চলিস্ন পান ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ক্রেতাও এখন হিসাব করে পান কিনছেন। বাজুপাড়া এলাকার নারী পান ক্রেতা ছফুরা বেগম বলেন, 'পানের দাম দুই তিন গুন বার্ইযা গ্যাছে। যেই পান এক মাস আগে ২০ টাহায় কিনতাম, এহন হেই পান ৫০-৬০ টাহায় কিনি।'

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম শাজাহান কবির জানান, ঘন কুয়াশা, অতিরিক্ত শীত এবং আবহাওয়া মেঘলা থাকার কারণে পান গাছে ছত্রাকের আক্রমন দেখা দেয়। এরকম হলে স্বল্প মাত্রায় জৈব বালাইনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। এ ছাড়া শৈত্যপ্রবাহের হাত থেকে বরজ রক্ষার জন্য পলিথিন টানিয়ে বেড়া দেওয়া হলে ছত্রাকের আক্রমন কম হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে