কুড়িগ্রামের রাজারহাটে শীতের দাপট অব্যাহত রয়েছে। আয় কমেছে দিনমজুর শ্রমিকদের। এদিকে, শেরপুরের ঝিনাইগাতীর খেটে খাওয়া মানুষ শীতে যবুথবু। তবে উপজেলা প্রশাসের কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, হিমালয়ের পাদদেশ থেকে আসা হিমেল বাতাস আর ঘনকুয়াশায় উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের রাজারহাটে অব্যাহত রয়েছে শীতের দাপট। শীতের দাপটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের জনজীবন।
শনিবার সকাল ৬টায় রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৮শতাংশ বলে নিশ্চিত করেছেন রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।
তিনি বলেন, 'বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অত্যধিক হওয়ায় দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিলছে না এবং সূর্যের কাঙ্খিত তাপ পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ এবং গত ২৪ ঘণ্টায় বাতাসের গড় গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ০৬-১০ কিলোমিটার।' শনিবার বেশ কয়েকবার সূর্য দেখা দিয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় পরিস্থিতি আরও উন্নতি হতে থাকবে। এ ছাড়া এবারের শীত মৌসুমে এটিই শেষ শৈত প্রবাহ।
এদিকে, কনকনে ঠান্ডা ও হালকা কুয়াশায় আবৃত হয়ে পড়েছে চারদিক। শীতার্তরা তীব্র কষ্টে দিন পার করছেন। দিনমজুর, শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা শীতের তীব্রতায় কাজও করতে পারছেন না। ফলে আয় কমেছে তাদের। এসব কারণে এ উপজেলার শীতার্ত ও ছিন্নমূল মানুষের রাত কাটে এখন অসহনীয় দুর্ভোগে। শীতের একেকটি রাত যেন তাদের কাছে দুঃস্বপ্ন।
অপরদিকে, শৈত্যপ্রবাহের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধারা। প্রায়ই সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি জানান, গত ৩ দিন হিমেল হাওয়ার ফলে শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার সদরসহ পাহাড়ি এলাকায় প্রচন্ড শীত জেঁকে বসেছে। কনকনে হিমেল হাওয়া আর প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে দেখা দিয়েছে আমাশা, ডায়রিয়া, ঠান্ডা ও পানি বাহিত রোগ। এতে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা আক্রান্ত হয়ে ঝিনাইগাতী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রচন্ড শীতে গরু, মহিষ ও ছাগল নিয়ে বিপাকে কৃষক। গরিব-দুঃখী ও ছিন্নমূল মানুষেরা অতি কষ্টে দিনাপাত করছে। কনকনে হাড়-কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে ভোর বেলায় কাজের সন্ধানে বেরিয়ে যায় গরিব মানুষগুলো। চলতি বোরো ফসলের মাঠ পরিস্কার পরিছন্নতা ও বোরো চারা রোপণের কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। প্রচন্ড শীতকে উপেক্ষা করে কৃষকরা সকাল থেকেই ফসলের মাঠে কাজ করেন।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল জানান, ত্রাণ ও পূর্ণবাসন মন্ত্রনালয় হতে প্রাপ্ত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এ বছর কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পে ও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ অব্যাহত আছে।