বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

চৌদ্দগ্রামে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার

চৌদ্দগ্রাম (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
চৌদ্দগ্রামে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার

কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামে আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বাহেরগড়া-শুভপুর সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া, ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অলি আহমেদ মজুমদারের মালিকানাধীন বিতর্কিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফাতেমা ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে।

জানা যায়, স্থানীয়দের অভিযোগ এবং এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলীর পরিদর্শন রিপোর্টে প্রমাণিত হওয়ায় নিম্নমানের খোয়া, ইট উত্তোলন এবং সোল্ডারে আরও মাটি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নির্দেশনা না মেনে ফের নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে দ্রম্নত সড়কটির কাজ শেষ করছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী সড়কটির একাংশের কাজ বন্ধ করে দেয়।

প্রকল্প ও উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর, কুমিলস্না ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার গুরুত্বপুর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলাধীন বাহেরগড়া (শাহ সাহেব) শুভপুর সড়কটি নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফাতেমা ট্রেডার্স। প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৫৫ লাখ ৪১ হাজার ৬৪১ টাকার দুই হাজার দশ মিটার আয়তনের সড়কটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় প্রতিষ্ঠানটি। প্রকল্পটি ৭ নভেম্বর শুরু এবং ৮ আগস্ট ২০২৫ শেষ হওয়ার নির্দেশনা ছিল। যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নতুন করে তিন মাসের সময় বাড়িয়েছে। নিম্নমানের কাজের অভিযোগে গত ১৬ জানুয়ারী এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র রায় প্রদত্ত পরিদর্শন রিপোর্টের আলোকে নতুনভাবে নির্মাণ এবং সোল্ডারে মাটি প্রদানের নির্দেশনা দিলেও তার তোয়াক্কা না করে নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছে বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানটি।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, পূর্বের অভিযোগ এবং তদন্তের পরেও নিম্নমানের খোয়া দিয়ে সড়কটির নির্মাণ কাজ চলছে। স্থানীয়রা বাঁধা দিলেও তারা তোয়াক্কা করছে না।

স্থানীয় যুবদল নেতা ইব্রাহীম খলিল জানান, এলজিইডির তদন্তে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার প্রমাণিত হওয়ার পরও ফাতেমা ট্রেডার্স গায়ের জোরে আরও নিম্নমানের ইট, খোয়া ব্যবহার করে সড়কটি নির্মাণ করছে। সলাকান্দি গ্রামের সত্তোর্ধ বৃদ্ধ আবদুল মান্নান জানান, ৩ ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক এটি। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে যেভাবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সড়টি ৫-৬ মাসও স্থায়ী হবে না।

এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, গত ১৫ জানুয়ারী সড়েজমিনে পরিদর্শন করলে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ১৬ জানুয়ারী অফিস থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২৮ জানুয়ারী পর্যন্ত নির্দেশনা না শুনে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে। ইতোমধ্যে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফাতেমা ট্রেডার্সের স্বত্বাধীকারী অলি আহমেদ মজুমদার বলেন, 'স্থানীয় কিছু যুবক আমাকে ডিস্ট্রার্ব করছে। এলজিইডি নির্মাণাধীন সড়ক পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে পারে। এমনকি জেলাতেও অভিযোগ দিতে পারে। এটা তাদের এখতিয়ার।'

এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান জানান, 'প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পরপরই আমরা মনিটরিংয়ে রাখি। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে অফিসে ডেকে মৌখিকভাবে সতর্ক করি। পরে গত ১৬ জানুয়ারী লিখিত চিঠি দেই। এরপরও শুনেছি তারা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে অফিসিয়ালি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকেও জানানো হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে