সিরাজগঞ্জের উলস্নাপাড়ায় পুলিশ হেফাজতে রেখে রোকন মোলস্না (৩৬) নামে এক ট্রাক চালককে নির্যাতনের অভিযোগে উলস্নাপাড়া থানা ও সলঙ্গা থানার সাবেক দুই ওসিসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তা ও অজ্ঞাত ৯ থেকে ১০ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ আমলী আদালতে ট্রাক চালক রোকন মোলস্না নিজেই বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। ট্রাক ড্রাইবার রোকন পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার নেছরাপাড়া এলাকার রহমত মোলস্নার ছেলে। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী গোলাম হাদী কিরণ।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- সিরাজগঞ্জের উলস্নাপাড়া থানার সাবেক ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম, সলংঙ্গা থানার সাবেক ওসি এনামুল হক, সলঙ্গা থানার সাবেক তদন্ত ওসি শেখ তাজউদ্দিন আহমেদ, উলস্নাপাড়া থানার সাবেক সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুস ছালাম, সাব-ইন্সপেক্টর (সলঙ্গা থানা) মনসুর রহমান, সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর (সলঙ্গা) আব্দুল কুদ্দুস। অজ্ঞাত আরও ৯ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায় ৫ মে ২০২৪ এ ট্রাক চালক রোকন মোলস্না বগুড়া থেকে পাবনা যাওয়ার পথে রাত ১টায় ঢাকা-নগরবাড়ি মহাসড়কের কাওয়াক মোড়ে রাত্রিকালীন ডিউটিরত পুলিশের পিক-আপের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উলস্নাপাড়া মডেল থানার সাবেক ওসি আসিফ মুহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম ড্রাইভার রোকন মোলস্নার দিকে রিভলভার তাক করেন। ট্রাক চালক ভয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে সিরাজগঞ্জ রোডের দিকে দ্রম্নত ছুটতে থাকলে পুলিশের গাড়িও পিছু নেয়। খবর পেয়ে সলঙ্গা থানার সাবেক ওসি এনামুল হক ও ট্রাকটি ধরতে পিছু নেয়। পরে সলঙ্গা থানার রাজশাহী-পাবনা মহাসড়কের হরিণচড়া ট্রাক চালক রোকন মোলস্নাকে আটক করে মারধর এবং ওসি আসিফ তার ডান পায়ে গুলো করে সলঙ্গা থানায় নিয়ে ৩টি মামলা দেন। এরপর গ্রেপ্তার দেখিয়ে শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতে ট্রাক চালক রোকন মোলস্নার ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদি রোকন মোলস্না বলেন, উলস্নাপাড়া থানার সাবেক ওসি আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম পিস্তল দিয়ে তাকে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে। তার একটি পা নেই। তিনি দাবি করেন মিথ্যা মামলায় কারাগারে থাকার কারণে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে পারেননি। দীর্ঘদিন পর কারাভোগ করে জামিনে এসে তিনি মামলা করেছেন। অভিযুক্ত এক নম্বর আসামি উলস্নাপাড়া মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসিফ মুহাম্মদ সিদ্দিকুর ইসলাম দাবি করেন, মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। হয়রানি করতেই এই মামলা করা হয়েছে।