টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় গত ২১ নভেম্বর ফ্রেন্ডস ফোরামের পক্ষ থেকে নিরাপদ সড়ক ও বাল্যবিয়ে সম্পর্কিত এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় ওই মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন কালিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সামাদ। এ সময় মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আজিম উদ্দিন বুলবুলির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আব্দুস সবুর, আহসান হাবীব, ক্রীড়া শিক্ষক জয়নাল আবেদীন, ইংরেজি শিক্ষক আবু হানিফা আজাদ, আবুবকর সিদ্দিক, আবু হাসান, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা নিরাপদ সড়ক বিষয়ক আলোচনায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, প্রায় প্রতিদিনই আমাদের উপজেলার কোনো না কোনো জায়গায় সড়ক পথে দুর্ঘটনা ঘটছে তা বেশির ভাগই অসতর্কতার জন্যই হয়ে থাকে। তাই সবাইকে সতর্কতার সাথে রাস্তাঘাটে চলাচল করা উচিত। বিশেষ করে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্কুলপড়ুয়া ছেলেরা মৃতু্য বরণ করছে। অপ্রাপ্ত বয়সে মোটরসাইকেল চালানোর কারণেই সখীপুরে অনেক মা-বাবার বুক খালি হচ্ছে। এ মৃতু্য ঝুঁকি এড়াতে চাইলে অবশ্যই মোটরসাইকেল থেকে দূরে থাকতে হবে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় যেতে হবে। শিক্ষকরা ছাত্রদের উদ্দেশ করে বলেন যে, মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য মা-বাবাকে মানসিক নির্যাতন না চালানোর জন্য।
এছাড়া বাল্যবিয়ের কুফল নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুস সামাদ। তিনি রাষ্ট্রীয় আইন সম্পর্কে ছেলেমেয়েদের কাছে তুলে ধরেন। এ সময় বক্তারা বাল্যবিয়ের বিভিন্ন কুফল সম্পর্কে শিক্ষর্থীদের অবহিত করেন। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অনেক পরিবার অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তাদের মেয়েদের অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন। এসব শ্রেণির মানুষ বাল্যবিয়েকে মেয়েদের সতীত্ব রক্ষার উপায় হিসেবে দেখে থাকেন এবং তাদের স্বাধীনতা ও চলাফেরা সীমিত করা হয়। শিক্ষার অভাব এবং বাল্যবিয়ের নেতিবাচক পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতার অভাব নিয়ে আলোকপাত করা হয়। আর্থিক অভাবের কারণে অনেক পিতা-মাতা কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেন। তারা বোঝা কমানো এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা উন্নত করার উপায় হিসেবে দেখে থাকেন বাল্যবিয়েকে। গরিব মানুষ কন্যাসন্তানকে বোঝা হিসেবে দেখে থাকেন। গ্রামাঞ্চলের অনেক পরিবার তাদের মেয়েদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামগ্রিক সুস্থতার ওপর বাল্যবিয়ের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সম্পর্কে অবগত নয়। বাল্যবিয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের এবং তাদের পরিবারের জীবনে বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পরে সবাই সমস্বরে দুই হাত উঁচিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সব বিধিনিষেধ মেনে চলার কথা অঙ্গীকার করেন।
উপদেষ্টা
ফ্রেন্ডস ফোরাম সখীপুর, টাঙ্গাইল।