ভালোবাসা কি বয়স দেখে আসে? চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় এই প্রশ্নটি এখন ভাইরাল। কারণ, এক ব্যতিক্রমী সম্পর্ক ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন ‘সিস্টার জিন’। ৫০ বছর বয়সে ছেলের বন্ধুকে বিয়ে করার পর এবার মা হতে চলেছেন তিনি—এই খবর জানিয়ে চমকে দিয়েছেন অনলাইন দুনিয়াকে।
চীনা ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ডাউইন-এ নিজের গর্ভধারণের খবর শেয়ার করে সিস্টার জিন জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর স্বামী দেফু এখন তাদের প্রথম সন্তানের অপেক্ষায়। বয়সের ব্যবধান নিয়ে সমালোচনা চললেও জিন স্পষ্টভাবে বলেছেন—“ভালোবাসা কখনো বয়সের ফ্রেমে আটকে থাকে না।”
প্রায় দুই দশক আগে বিচ্ছেদের পর সন্তানদের একাই বড় করেছেন জিন। ছেলের বন্ধু দেফুর সঙ্গে তার পরিচয় হয় এক নববর্ষের পার্টিতে। অতিথি হয়ে আসা দেফু সেই দিনের পর থেকে জিনের জীবনে স্থায়ী হয়ে যান। প্রথম দেখার পর পুরো এক সপ্তাহ জিনের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে তার বাসায় ছিলেন দেফু। সেখান থেকেই গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠতা, যা ধীরে ধীরে পরিণত হয় প্রেমে।
চলতি বছরের শুরুতে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেন। এরপর চীনের নানা প্রান্ত ঘুরে বেড়িয়েছেন এই দম্পতি—উপভোগ করেছেন ক্যান্টনিজ খাবার, ইতিহাসখ্যাত ওয়ং ফেই-হাংয়ের শহর ভ্রমণ করেছেন হাতে হাত রেখে।
ডাউইনে সিস্টার জিনের অনুসারীর সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। সেখানে তিনি নিয়মিত আপডেট দিচ্ছেন তার গর্ভাবস্থার অগ্রগতি, দেফুর সঙ্গে সম্পর্কের গল্প এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে। কেউ কেউ এই প্রেমের সাহসিকতা দেখে অনুপ্রাণিত হলেও, অনেকেই আবার কটাক্ষ করছেন বয়সের ব্যবধান নিয়ে।
সমালোচকদের উদ্দেশে জিনের জবাব, “আমি জানি আমাদের ভালোবাসা সত্যিকারের। সময়ই এর প্রমাণ দেবে। মানুষ কী বলছে, তা নিয়ে ভাবার সময় আমার নেই।”
সবচেয়ে চমকপ্রদ খবরটি এসেছে চলতি মাসের ৮ তারিখে, যখন সিস্টার জিন ঘোষণা দেন যে তিনি মা হতে চলেছেন। বয়সজনিত ঝুঁকি থাকলেও সন্তানের আগমনে উচ্ছ্বসিত জিন ও দেফু ইতোমধ্যেই নবজাতকের জন্য খাট কিনে ফেলেছেন। তার প্রি-নেটাল চেকআপ রিপোর্টও তিনি প্রকাশ করেছেন অনলাইনে—সমর্থকদের আশ্বস্ত করতে।
তাদের সম্পর্ক নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করে বলছেন, সবকিছু যেন সাজানো এক নাটক। কেউ আবার ঠাট্টা করে বলছে—“এখন কি দেফু তাকে রাশিয়ায় নিয়ে যাবে?” কিংবা “শ্বশুর-শাশুড়ির বয়সের স্ত্রীর সঙ্গে কীভাবে সংসার করবে দেফু?”
কিন্তু এসব প্রশ্নের ভিড়ে সিস্টার জিনের উত্তর সরল, “ভালোবাসা যদি সত্য হয়, তাহলে সেটার ব্যাখ্যা লাগে না। একদিন সবাই বুঝবে।”