শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

পিএইচডি থিসিস জালিয়াতি রোধে ঢাবি ও ইউজিসির কমিটি গঠন

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
পিএইচডি থিসিস জালিয়াতি রোধে ঢাবি ও ইউজিসির কমিটি গঠন

পিএইচডি থিসিস জালিয়াতি রোধে পদক্ষেপ নিতে দু'টি কমিটি গঠন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

রোববার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এরপর দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। রিটের পক্ষে ছিলেন আবেদনকারী আইনজীবী ছিলেন মো. মনিরুজ্জামান (লিংকন)।

২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে 'ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল শিরোনামে' প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট করেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে একই বছরের ৪ ফেব্রম্নয়ারি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি কীভাবে অনুমোদন করা হয়, তা খতিয়ে দেখে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে ইউজিসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে 'ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল'- এ বিষয়ে তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ অনুসারে ঢাবি ও ইউজিসি আদালতে প্রতিবেদন দেন।

রোববার আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন জানান, তারা আজকে বলেছে- এসব বিষয়ে কমিটি গঠন করেছেন। সেই প্রতিবেদনের তথ্য দুই সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করতে বলেছেন। এছাড়া ওই শিক্ষকের থিসিসের বিষয়েও প্রতিবেদন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।

?'ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮% নকল' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ৯৮ শতাংশ হুবহু নকল পিএইচডি গবেষণা অভিসন্দর্ভের (থিসিস) মাধ্যমে 'ডক্টরেট' ডিগ্রি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর। এই গবেষণার সহ-তত্ত্বাবধায়ক অভিযোগ করেছেন, একাধিকবার অনুরোধ করলেও লুৎফুল কবীর তাকে থিসিসের কোনো কপি দেননি।

২০১৪ সালের দিকে 'টিউবারকিউলোসিস অ্যান্ড এইচআইভি কো-রিলেশন অ্যান্ড কো-ইনফেকশন ইন বাংলাদেশ : অ্যান এক্সপেস্নারেশন অব দেওয়ার ইমপ্যাক্টস অন পাবলিক হেলথ' শীর্ষক ওই নিবন্ধের কাজ শুরু করেন আবুল কালাম লুৎফুল কবীর। তার এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আবু সারা শামসুর রউফ। আর সহ-তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।

গবেষণায় ৯৮ শতাংশ হুবহু নকলের বিষয়টি নজরে আসার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে একজন গবেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের কাছে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এছাড়া লুৎফুল কবীরের অভিসন্দর্ভে নিজের একটি গবেষণা থেকে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ ও তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে একটি চিঠি দিয়েছেন সুইডেনের গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোনাস নিলসন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গবেষণার চৌর্যবৃত্তি শনাক্তে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সফটওয়্যার টার্নইটইনের মাধ্যমে অভিসন্দর্ভটি যাচাই করে দেখা গেছে, ২০১২ সালে রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী-গবেষকের জমা দেওয়া একটি 'স্টুডেন্ট পেপারস'-এর সঙ্গে লুৎফুল কবীরের নিবন্ধের ৯৮ শতাংশ হুবহু মিল রয়েছে। এটিসহ মোট ১৭টি জার্নাল, আর্টিকেল ও গবেষণাপত্রের সঙ্গে নিবন্ধটির বিভিন্ন অংশের উলেস্নখযোগ্য মিল পাওয়া গেছে, যেগুলোর সবই লুৎফুল কবীরের অভিসন্দর্ভের আগে প্রকাশিত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে