শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

...তবু আমারে দেব না ভুলিতে

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ২৬ মে ২০২২, ০০:০০
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে দলের শ্রদ্ধাঞ্জলি -ফোকাস বাংলা

সারা দেশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন হয়েছে। এ উপলক্ষে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সকাল সাড়ে ৬টায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা।

পরে সুরা ফাতেহা পাঠ করেন তারা। এছাড়া সকালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কবি পরিবারের সদস্যরা। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এ সময় তিনি জাতীয় জীবনে কবি নজরুল ইসলামের নানা অবদান তুলে ধরেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকেও সকালে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এদিকে, কবির জন্মদিন উপলক্ষে দিনব্যাপী দেশজুড়ে নানা আয়োজন করা হয়েছে। সকালে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বিকালে ছায়ানট, শিল্পকলার মুক্তমঞ্চে ও নজরুল ইন্সটিটিউটে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন করা হয়েছে।

নজরুল স্মৃতিবিজড়িত কুমিলস্নার বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে (টাউন হল) সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুমিলস্না জেলা প্রশাসন কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু নজরুলের জীবনদর্শন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তাই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কবিকে দেশে এনে নাগরিকত্ব উপহার দিয়েছেন। জাতীয় কবি নজরুল ছিলেন সাম্যের কবি, সম্প্রীতির কবি, প্রেমের কবি ও বিদ্রোহী কবি। তিনি কুমিলস্নায় বসে অনেক কবিতা লিখেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি

\হবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, কবিতার ইতিহাসে কাজী নজরুল ইসলামের 'বিদ্রোহী' এক অনন্য সাধারণ রচনা। এক রাতেই তিনি বাংলা তথা বিশ্বসাহিত্যের অনবদ্য এ কবিতাটি রচনা করেছেন উলেস্নখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯২১ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নজরুল রচনা করেন ১৪১ পঙক্তির এই ভুবনবিজয়ী কবিতা- যার প্রথম শ্রোতা ছিলেন মুজাফফর আহমদ। তার সূত্রে জানা যায়, সে সময় বলপেন বা ফাউন্টেনপেন ছিল না। দোয়াতে বারে বারে কলম ডোবাতে গিয়ে তার মাথার সঙ্গে তার হাত তাল রাখতে পারবে না ভেবে নজরুল কবিতাটি প্রথমে পেন্সিলে লিখেছিলেন। কবিতাটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল মানচিত্র। যেখানে বেদ-পুরাণ-উপনিষদ-গীতা মহাকাব্য থেকে ইসলামের অনুষঙ্গ অসামান্য দক্ষতায় চিত্রিত হয়েছে।'

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, কুমিলস্নার মাটি ও মানুষের সঙ্গে নজরুলের রয়েছে অটুট বন্ধন। ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নজরুল কুমিলস্নায় এসেছেন মোট পাঁচবার। সবমিলিয়ে থেকেছেন প্রায় ১১ মাস। নজরুলের দাম্পত্য জীবনের বন্ধনও ঘটেছিল কুমিলস্নায়। কুমিলস্নায় দৌলতপুরে ৭৩দিন অবস্থানকালে নজরুল ১৬০টি গান ও ১২০টি কবিতা রচনা করেছেন। এখানকার রচনা নজরুলকে প্রেমিক কবি হিসেবে পাঠক দরবারে পরিচিত করেছে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রকৃতি, মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নজরুলকে আকর্ষণ করেছিল। সে সময় তিনি সুদূর কলকাতা থেকে ছুটে এসেছেন ময়মনসিংহ, কুমিলস্না, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ পূর্ব বাংলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। স্মারক বক্তৃতা করেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও নজরুল গবেষক শান্তিরঞ্জন ভৌমিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন (রিমি) এমপি, কুমিলস্না-৬ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান এবং কবিপৌত্রী খিলখিল কাজী ও মিষ্টি কাজী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কুমিলস্নার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। পরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে নৃত্যনাট্যসহ ৩০ মিনিটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে