শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রংপুরে ১৫ বছরে বিদেশগামীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে

আবেদুল হাফিজ, রংপুর
  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
রংপুরে ১৫ বছরে বিদেশগামীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে

রংপুরে আগে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ-সুবিধা ছিল কম। অর্থের অভাবে অনেকেরই বিদেশে গিয়ে কাজ করায় ছিল অনীহা। যুগের সঙ্গে পাল্টে গেছে সুযোগ-সুবিধা। সরকারিভাবে সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে বেড়েছে বিদেশগামীর সংখ্যা। বিগত ১৫ বছরে বিদেশগামীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ১০৪ জনে। এর আগে এর সংখ্যা ছিল বাস। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের সুবাদে এখন অনেকেই প্রবাসের দিকে ঝুঁকছে। এর মধ্যে মিঠাপুকুর সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। একেবারে পিছিয়ে রয়েছে তারাগঞ্জ উপজেলা।

রংপুর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিদেশগামীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয় বর্তমান সরকার। এ জেলায় শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্বল্পতা, বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের অভাবে অনেকেই বিদেশে কর্মসংস্থানের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

সূত্রমতে, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বু্যরো (বিএমইটি) সার্ভরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ৭১৬ জন অভিবাসী কর্মীর মধ্যে রংপুরে এর সংখ্যা ৪২ হাজার ২১ জন। এর মধ্যে রংপুর সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা মিলে রয়েছে, ৭ হাজার ১৭, কাউনিয়ায় ২ হাজার ২১৮, বদরগঞ্জে ১ হাজার ৬১, পীরগঞ্জে ১ হাজার ৭২৪, মিঠাপুকুরে ৮ হাজার ৫৭৯, তারাগঞ্জে ১ হাজার ৮১, পীরগাছায় ৬ হাজার ২৫৯ ও গংগাচড়া উপজেলায় ৩ হাজার ৭৩৯ জন। এর মধ্যে মিঠাপুকুর প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পীরগাছা। তবে এই ক্ষেত্রে সব উপজেলা থেকে পিছিয়ে রয়েছে তারাগঞ্জ।

জানা গেছে, সৌদিআরব, কাতার, ওমান, জর্দান, সাউথ করিয়া, মালয়েশিয়ায়, সিঙ্গাপুরে অভিবাসীরা অবস্থান করছেন। এর মধ্যে সৌদি আরবে সবচাইতে বেশি। ওই দেশে অভিবাসীর সংখ্যা ২ হাজার ২০২ জন রয়েছে।

প্রবাসীদের অভিযোগ, অসুস্থতার কারণে দেশে ফিরে আসা, চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজ ও বেতন না পাওয়া, কাজের আকামা না করে যাওয়া এবং কারাগারে আটক কর্মীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ১৩০ অভিবাসীর অভিযোগ নিষ্পত্তি করেন। এতে ফের তারা বিদেশ যেতে পারছেন।

অন্যদিকে, ২০০৯ সালে থেকে ১৫ বছরে রংপুর জেলার ৩৭৫ জন প্রবাসীর মারা যায়। তাদের প্রত্যেকে তিন লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। যার পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৭ টাকা। ২০১৬ সাল থেকে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত বিদেশগামী কর্মীদের রেজিস্ট্রেশন ও ফিঙ্গার প্রিন্ট করা হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২১৫ জনের। এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশন রয়েছে ৪৮ হাজার ৮৫৩ জন ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট ৫২ হাজার ৩৬২ জন। তাদের তিন দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সোমবার কর্মসংস্থান অফিসে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, অফিস ফ্লোরে বিদেশগামীতে ইচ্ছুক ৫২ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রশিক্ষণের সংখ্যা ৩ হাজার ২৬৬ জনের দেওয়া হয়েছে বলে আফিস জানায়।

রংপুর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক আমেনা পারভীন জানান, বর্তমান সরকার প্রবাসীদের কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগের ফলে রংপুর জেলায় অভিবাসন ও রেমিট্যান্সের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বিদেশগামীদের নিয়ম মেনে বৈধ পথে বিদেশ গমনের পরামর্শ দেন। এতে এই জেলার বৈদেশিক আয় বৃদ্ধি পাবে ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে বলে তিনি মনে করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে