বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

নবনিযুক্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে রমেকে অচলাবস্থা

রংপুর প্রতিনিধি
  ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নবনিযুক্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে রমেকে অচলাবস্থা

রংপুর মেডিকেল কলেজে (রমেক) নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহফুজার রহমানের পদত্যাগের দাবিতে সেখানে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকান্ডে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২ দিন ধরে এ আন্দোলনের কারণে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- 'ওই অধ্যক্ষ ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বিকৃত করতে চাপ প্রয়োগ করেছিলেন এবং পরীক্ষায় অকৃতকার্য করার হুমকি দিয়েছিলেন।'

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী, ছাত্র-জনতার ব্যানারে আন্দোলনে সেখানকার ক্লাস, পরীক্ষা এবং দাপ্তরিক কাজ হচ্ছে না। এর বদলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

অন্যদিকে সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ না করে অলস সময় কাটাচ্ছেন। তাদের অনেকেই উপস্থিত নেই। এর আগের দিন নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ তার কর্মস্থলে যোগ

দিতে গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-শিক্ষকরা তাকে বাধা দেন। এ সময় অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, অধ্যক্ষের কক্ষে প্রধান ফটকে তালা ও পদত্যাগের দাবি সংবলিত ব্যানার ঝুলছে। এ সময় ভাইস প্রিন্সিপাল পদে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ডা. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। এখনো কাজে যোগদান করতে না পারার কথা জানালেন তিনি। তবে তিনি আন্দোলনকারীদের সমর্থনে যোগদান থেকে বিরত রয়েছেন। নবনিযুক্ত প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, ওই প্রিন্সিপাল জ্যেষ্ঠতা ভঙ্গ করে এই কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল হয়েছিলেন। এখন তার প্রিন্সিপাল হওয়ার যোগ্যতা নেই।

আন্দোলনের মুখপাত্র ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. মো. হাসান আলী জানান, নবনিযুক্ত প্রিন্সিপাল পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তিনি অভিযোগ করেন, 'নবনিযুক্ত প্রিন্সিপাল হাসিনা সরকারের দোসর। তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে বিরত থাকার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন ও পরীক্ষায় অকৃতকার্য করার হুমকি দিতেন। এমনকি শহীদ আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বিকৃত করার চাপ প্রয়োগ করেছিলেন। তিনি প্রিন্সিপাল হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন।'

ওইদিন বিকালে নগরীর ধাপে একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন নবনিযুক্ত অধ্যাপক ডা. মাহফুজার রহমান। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আন্দোনকারীরা মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তার বিরুদ্ধে লেগেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, 'যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমি প্রিন্সিপাল পদ থেকে সরে যাব, এমনকি সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে আমি তা মেনে নিব।' তিনি এও বলেন, 'হাসিনা সরকারের আমলে ৫ বছরে তার যোগ্যতা থাকার পরও অন্য দুজনকে সেখানে অধ্যক্ষ পদে বসানো হয়েছিল। এমনকি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু আমি সেখানে যোগদান করিনি।'

উলেস্নখ্য, গত ২৯ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শাহ মো. সারোয়ার জাহানকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি করা হয়। সেই সঙ্গে কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহফুজার রহমানকে অধ্যক্ষ এবং সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ার হোসেনকে উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও অধ্যাপক পদে পদায়ন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে