সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২
নগরে যাত্রী পরিবহণ

মেট্রোরেল ছুঁয়েছে চার লাখের মাইলফলক

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
মেট্রোরেল ছুঁয়েছে চার লাখের মাইলফলক
মেট্রোরেল ছুঁয়েছে চার লাখের মাইলফলক

মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর একদিনে ৪ লাখের বেশি যাত্রী পরিবহণের কথা জানিয়েছে পরিচালনকারী কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএল। গত তিন বছরের মধ্যে দৈনিক যাত্রী পরিবহণে এই সংখ্যা মাইলফলক ছুঁয়েছে বলে ডিএমটিসিএল তাদের ফেসবুকে শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

বর্তমানে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে উভয় পথে যাত্রী পরিবহণ করছে এবং সাপ্তাহিক ছুটি দিন শুক্রবারও এক বেলা মেট্রোরেল চলছে রাজধানীতে। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ চার লাখের কাছাকাছি যাত্রী পরিবহণের কথা জানিয়ে ছিল মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

ফেসবুকে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রম্নয়ারি) মেট্রোরেল যাত্রী সেবায় প্রথমবার ৪ লাখ ৩ হাজার ১৬৪ জন যাত্রী পরিবহণ করেছে। এই মাইলফলক অর্জনে মেট্রো পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত যাত্রী, শুভানুধ্যায়ী এবং অংশীজনদের মেট্রোরেল পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।

ডিএমটিসিএলের ভাষ্য, 'এ মহতি লক্ষ্য অর্জনে সার্বিক নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হককের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সম্মানিত মেট্রো যাত্রীদের সেবায় আমরা নিবেদিত। আগামীর পথ চলায় আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।'

এর আগে গত ৪ ফেব্রম্নয়ারি উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোডের (আরআরআর) সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে সভায় ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছিলেন, 'গত ৩ ফেব্রম্নয়ারি ৩ লাখ ৮২ হাজার প্যাসেঞ্জার সর্বোচ্চ মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেছে। সেটা অবশ্য শুরুর দিকে ছিল ১৫-২০ হাজার। আমাদের টার্গেট হচ্ছে সাড়ে ৫ লাখ যাত্রী পরিবহণ করা। এটি ব্রেক ইভেন্ট পর আমাদের হবে। আমরা যদি হেডওয়ে কমাই, তাহলে এটি আর বেশি দিন দূরে নয়। আমরা যদি টঙ্গী পর্যন্ত চালু করতে পারি তাহলে আমাদের যাত্রী আরও বাড়বে।'

এমআরটি-৬ রুটটি চালু হয়েছে ধাপে ধাপে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন। ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। ২০২৪ সালের শুরুতেই উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনের সবই খুলে দেওয়া হয়।

শুরুতে চার ঘণ্টা, পরে ছয় ঘণ্টা চলেছে ট্রেন। এখন পিক আউয়ারে ৮ মিনিট পরপর ট্রেন এলেও প্রথম দিকে ২০ মিনিট পরপর ট্রেন চলেছে। সে সময় মানুষ মূলত শখের কারণে ঘুরতে যেত।

প্রথমে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে ট্রেন। ২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল থেকে চলে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা। পরীক্ষামূলক যাত্রায় ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ছয় মাসে মেট্রোরেল আয় করে ১৮ কোটি ২৮ লাখ ৬ হাজার ৫১৪ টাকা। ক্ষমতাচু্যত আওয়ামী লীগ সরকারের সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদে এই তথ্যটি প্রকাশ করেন ২০২৪ সালের ৪ মার্চ।

প্রায় এক বছর এভাবে চলার পর ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর থেকে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। প্রথমে সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত যাত্রী চলাচল করত। ধীরে ধীরে সময় বাড়িয়ে সকাল ৭টা থেকে এখন রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত করা হয়েছে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পুরোদমে চালু হওয়ার পরেই মেট্রোরেলে দিনে কোটি টাকার বেশি আয় হতে থাকে বলে জানিয়েছে ডিএমটিসিএল। উদ্বোধনের পর থেকে ২০২৩ সালের ৮ মার্চ পর্যন্ত

৭০ দিনে ৭ লাখ ৯০ হাজার যাত্রী চলাচল করে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভাড়া ছিল ৬০ টাকা। অর্থাৎ সে সময় দিনে ব্যবহার করতেন গড়ে ১০ হাজারের কিছু বেশি যাত্রী। এখন পুরো পথে দিনে যাতায়াত করছেন তিন থেকে সাড়ে তিন লাখের মতো যাত্রী।

ঢাকার আধুনিক গণপরিবহণ মেট্রোরেল এখন সকাল ৭টা ১০ মিনিটে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। মতিঝিল থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল সাড়ে ৭টায়। উত্তরা থেকে শেষ ট্রেন ছাড়ে রাত ৯টায়। মতিঝিল থেকে ছাড়ে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে।

এখন এমআরটি লাইন-৬ এর আওতায় মতিঝিলের শাপলা চত্বর হয়ে কমলাপুর রেল স্টেশন পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার অংশ নির্মাণ করা হচ্ছে। মতিঝিল থেকে কমলাপুরের সিভিল অংশের কাজ প্রায় শেষ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে