চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, অনেক বছর ধরে এখানে কোনো মেয়র বা জনপ্রতিনিধি আসেননি পরিস্কার করতে। আজকে এখানে এসে আমি যা দেখলাম, তাতে মনে হচ্ছে এটি কোনো খাল নয়, বরং একটি গার্বেজ স্টেশন। তাই আমরা এখন থেকে নিয়মিত পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনা করব। ইতোমধ্যে তিন-চার মাস ধরে আমাদের পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চলছে, এবং প্রতিটি খাল পরিষ্কারের আওতায় আনা হচ্ছে।
সোমবার চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকার জলাবদ্ধতা কমাতে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের চাক্তাই ডাইভার্শন খাল (বীরজাখাল-বৌবাজার) পরিষ্কার ও খনন কাজের কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, 'মেয়র হিসেবে আমার বর্তমানে মূল ফোকাস হচ্ছে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা হ্রাস করা, বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলোতে। বীরজাখাল এখন আর খাল নেই, এটি যেন একটি ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। চারপাশে শুধু ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। খাল পরিষ্কার না করায় এর অস্তিত্ব প্রায় হারিয়ে গেছে।'
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে কোমর থেকে গলা পর্যন্ত পানি জমে যায়। এটি ভয়াবহ একটি অবস্থা। এলাকাবাসী জানতে চায়, কিভাবে এই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে? আমি আশ্বস্ত করতে চাই, আমরা সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছি যাতে নগরবাসী দ্রম্নত এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পায়। আমাদের এখন মূল লক্ষ্য হচ্ছে জলাবদ্ধতা নিরসন করা এবং জনগণকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেওয়া। বিশেষ করে বাকলিয়া, চানগাঁও, মুরাদপুরসহ নিচু এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি জলাবদ্ধতার শিকার হয়। জোয়ারের পানি এবং বৃষ্টির পানি একসঙ্গে মিশে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সেই সঙ্গে নোংরা পানির কারণে মশার উপদ্রবও বেড়ে যায়। এই খালটির সঙ্গে রাজাখালি খাল যুক্ত, যা সরাসরি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে মিশেছে। ফলে এই খাল পরিষ্কার না হলে রাজাখালি খালের পানিও বাধাগ্রস্ত হবে এবং কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে ময়লা জমতে থাকবে।
খাল দখল প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, 'এখানে একটি বড় সমস্যা হলো খালের জায়গা দখল হয়ে গেছে। খালের মধ্যেই কিছু বিল্ডিং নির্মিত হয়েছে, যা পানির স্বাভাবিক প্রবাহ আটকে দিচ্ছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই্ত জনগণের দুর্ভোগ কমানোর জন্য যদি খালের ওপর কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকে, তাহলে আমরা তা ভাঙতে বাধ্য হবো। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীকে মুক্ত করা।'
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, উপ-প্রধান পরিছন্ন কর্মকর্তা প্রণব শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরীসহ (মারুফ) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।