শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

রোমাঞ্চকর ম্যাচ জিতে টানা চতুর্থ শিরোপা বসুন্ধরার

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২৭ মে ২০২৩, ০০:০০
শুক্রবার কিংস অ্যারেনায় বিপিএলের ম্যাচে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে হারিয়ে তিন ম্যাচ হাতে রেখেই টানা চতুর্থবারের মতো পেশাদার লিগের শিরোপা নিশ্চিত করার পর উচ্ছ্বসিত বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়রা -সংগৃহীত

ম্যাচ জিতলেই শিরোপা। ইতিহাস গড়ার হাতছানি। উদযাপনের প্রস্তুতিটা নিয়েই গ্যালারিতে উপস্থিত কিংসের হাজারো সমর্থক। প্রিয় দলের কাছে সে প্রত্যাশাটা তো তারা করতেই পারে। কারণ মাত্র তিন দিন আগেই যে ফেডারেশন কাপের স্থান নির্ধারণী ম্যাচে রাসেলকে হারিয়েছিল বসুন্ধরা কিংস।

শুক্রবার বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপেস্নক্সে অলিখিত শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে বসুন্ধরার প্রতিপক্ষ সেই রাসেলই। যে ম্যাচে রাসেলকে ৬-৪ গোলে হারায় বসুন্ধরা। ১০ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে এই জয়ে তিন ম্যাচ হাতে রেখে ১৭তম ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে টানা চতুর্থ বারের মতো প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের শিরোপা নিশ্চিত করল কিংস। পেশাদার লিগ শুরু হওয়ার পর (টানা চার শিরোপা) এই কৃতিত্ব

একমাত্র তাদেরই।

পরপর চার শিরোপা জিতে ঘরের ফুটবলের ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর সুযোগ। ম্যাচে তিন পয়েন্ট অর্জনের লক্ষ্যে তাই বলতে গেলে নিজের কোনো অস্ত্রই বাকি রাখলেন না কিংসের কোচ অস্কার ব্রম্নজন। এ দিন রবিনহো, ডরিয়েলটনের পাশাপাশি তারিক কাজীও ছিলেন প্রথম একাদশেই। ম্যাচের শুরুতেই লিড নেয় কিংস। ৬ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে রবিনহোর পাসে বল পেয়ে বাঁ-পায়ে পোস্টের কাছ থেকে কোনাকোনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন আরেক ব্রাজিলিয়ান ডরিয়েলটন (১-০)।

২৩ মিনিটে রবসনের বাড়িয়ে দেওয়া বল বক্সে পেয়ে ডান প্রান্ত থেকে পোস্টের কাছে থেকে ডান পায়ে দারুণ শট নিয়েছিলেন কিংসের মোরসালিন। তবে কর্নারের বিনিময়ে এ যাত্রা দলকে দ্বিতীয় গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা করেন রানা। মোরসালিনের কর্নার কিক বক্সে জটলার মধ্যে থেকে হেডে ক্লিয়ার করেন চার্লস দিদিয়ের। ২৬ মিনিটে ম্যাচে সমতা আনে শেখ রাসেল। ডান প্রান্ত থেকে ক্যানেথ ইকেছুকু বল পাঠান পোস্টের কাছে থাকা চার্লস দিদিয়েরকে। কিন্তু তিনি বলে কানেক্ট করতে পারেননি। তবে সুযোগটা হাতছাড়া করেননি ফাঁকায় দাঁড়ানো সুজন বিশ্বাস। ডান পায়ে বলটা জালে ঠেলে দেন সুজন (১-১)। ৩৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের তিন ফুটবলারকে কাটিয়ে ডান পায়ে শট নিয়েছিলেন মোরসালিন। তবে বল অল্পের জন্য জড়ায়নি রাসেলের জালে। ৩৮ মিনিটে বক্সের মাথা থেকে কিংসের ফুটবলারদের দুর্বল ডিফেন্ডিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বল ছিনিয়ে নেন দ্বীপক রয়। ডান পায়ের দুর্দান্ত শটে পরাস্ত করেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে (২-১)। ম্যাচে লিড নেয় রাসেল। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমেই আরও দুই গোল আদায় করে নেয় কিংস। (৪৫+৩) মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পাঠানো মোরসালিনের বল বক্সে নিয়ে ঢুকে পড়েন কিংস অধিনায়ক রবসন রবিনহো। তাকে আটকে দিতে ব্যর্থ হন মনির। অন্যপাশে ছিলেন তিমুর তালিপপ। তবে এই দুই ফুটবলারের মাঝ দিয়েই বা পায়ে দারুণ শট করেন রবিনহো। ডান পোস্টে লেগে বল ঢুকে যায় জালে (২-২)। (৪৫+৫) মিনিটে নিজেদের তৃতীয় গোলের দেখা পায় বসুন্ধরা। বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের পাওয়ার শটে লক্ষ্যভেদ করেন মোরসালিন (৩-২)। প্রথম একাদশে জায়গা পেয়ে এ দিন মোরসালিন যে পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন গোলটা তার প্রাপ্যই ছিল। দুর্দান্ত প্রথমার্ধ শেষ করে বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে লড়াইটা আরও জমে উঠে। ৫১ মিনিটে চতুর্থ গোলটিও আদায় করে নেয় ব্রম্নজনের শিষ্যরা। বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে রবসনের পাসে বল পেয়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন ডরিয়েলটন (৪-২)। ৬৬ মিনিটে বক্সের ডান প্রান্ত থেকে হেমন্তর পাসে বল পেয়ে পোস্টের কাছ থেকে রাসেলের জালে বল পাঠিয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ডরিয়েলটন (৫-২)। ৬৯ মিনিটে টুটুল হোসেন বাদশার কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে জিকোকে পরাস্ত করেন রাসেলের ফুটবলার ক্যানেথ ইকেছুকু (৫-৩)। ৭৬ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে রবিনহোর কর্নার পোস্টের কাছ থেকে আলতো ছোঁয়াতে রাসেলের জাল কাঁপিয়ে নিজের চতুর্থ গোল আদায় করেন ডরিয়েলটন (৬-৩)। ৮৯ মিনিটে নিজেদের বক্সে নিহাত জামান উচ্ছ্বাসকে ফাউল করেন কিংসের ডিফেন্ডার রিমন। পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। ক্যানেথ ইকেছুকুর স্পট কিক আশ্রয় নেয় বসুন্ধরার জালে (৬-৪)। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ফেরা হয়নি রাসেলের। তাই ৬-৪ গোলে ম্যাচ জিতে টানা চতুর্থ শিরোপাটি উৎজাপন করে বসুন্ধরা কিংস।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে