সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফিরে শাহরিয়ার নাফীসের স্মৃতি রোমন্থন

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফিরে শাহরিয়ার নাফীসের স্মৃতি রোমন্থন

আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজ ও টি২০ বিশ্বকাপ উপলক্ষে জাতীয় দলের রাডারে থাকা প্রায় ৩৫ জন ক্রিকেটার ফিটনেস (রানিং) পরীক্ষা দিয়েছেন। শনিবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে ১৬০০ মিটার দৌড়েছেন ক্রিকেটাররা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার ও সাবেক ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীসও। এবার বিসিবির একজন কর্মকর্তা হিসেবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে পা রেখেছেন তিনি। তবে এই মাঠে ক্রিকেটার নাফীসের অনেক স্মৃতি আছে।

প্রায় দুই দশক বাদে আবারও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফেরার রোমাঞ্চ ছুঁয়ে গেছে সাবেক থেকে শুরু করে বর্তমান ক্রিকেটারদের। অঙ্কুরে ফিরে টাইগার সাবেক অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফীস যেন ফিরে গেলেন নিজ ক্যারিয়ারের প্রারম্ভে। মনে করিয়ে দিলেন এ দেশের ক্রিকেট উত্থানে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অবদান।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ক্রিকেট জীবন শুরু করা নাফীস করেন স্মৃতি রোমন্থন, 'আমাদের খেলার প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়া, খেলা দেখে শেখা সব এই স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করেই। এখনো মনে আছে খুব সম্ভবত ১৯৯৩ বা ১৯৯৪ সালে প্রথম এই মাঠে এসেছিলাম খেলা দেখতে। কাজিনরা যেহেতু খেলতেন, ফারুক ভাই (ফারুক আহমেদ) জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। পাশাপাশি আইকনিক যত খেলোয়াড়রা ছিলেন তাদের দেখে খেলা শুরু। আমার বাংলাদেশে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা এখানে শুরু। আমার প্রথম যে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটা আন্ডার নাইনটিতে একটা অনুশীলন ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে, সেটা এই মাঠে। জাতীয় দলে আমি এখানে কোন খেলা পাইনি, এটা আমার একটা আক্ষেপ। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গণ মানেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। এখানে আসলে আপনার ভালো না লেগে ফেরার কোন সুযোগই নেই।'

স্মৃতিপটে জমা কত কথা। কত ইতিহাস, কত আবেগ। বহু আগেই ব্যাডপ্যাড তুলে রাখা দুই নাফিস (শাহরিয়ার নাফীস ও নাফিস ইকবাল) এখন বিসিবি কর্মকর্তা। তবে অঙ্কুরে ফিরে আবেগাপস্নুত দুজনেই।

৩১ জানুয়ারি ২০০৫। সবশেষ যেবার এই মাঠেই গড়িয়েছিল ২২ গজের কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এই দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নাহিদ রানা হয়তো তখন কেবল হাঁটতে শিখেছেন। তবুও তীর্থভূমি নিয়ে দুচোখে তার আলাদা রোমাঞ্চ। জাতীয় দলের ম্যানেজার নাফিস ইকবাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে টেস্ট আর ওয়ানডে মিলিয়ে খেলেছেন ১১টি ম্যাচ। মুশফিকুর রহিম খেলেছেন বয়সভিত্তিক ক্রিকেট।

এদিক থেকে অবশ্য ব্যতিক্রম মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। টাইগার স্কোয়াডের একমাত্র সদস্য তিনি যার জাতীয় দলের জার্সিতে না হলেও অভিজ্ঞতা আছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলার। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলা হয়েছে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজার ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফীসেরও। মনে করিয়ে দিলেন এই মাঠ কেন দেশের ক্রিকেট এতটা গুরুত্বপূর্ণ।

গণমাধ্যমকে শাহরিয়ার নাফীস বলেন, 'যারা একদম নতুন প্রজন্ম তারা হয়তো এ মাঠে খেলেনি। কিন্তু সব সময় এ মাঠের কথা শুনেছে। যখন একদম ছোট ছিল, অল্প কিছু খেলা দেখেছেও। এখনতো আমাদের জাতীয় দলে এমন কিছু ক্রিকেটার আছে, যার জন্ম ২০০০ সালের কাছাকাছি সময়ে। তাদের মনে থাকার কথা না। কিন্তু আইকনিক স্টেডিয়ামের কথা তো সবাই মনে রাখে বা গল্প শুনেছে এবং তারা অনেক উৎফুলস্ন।'

মিনি ওয়ার্ল্ড কাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপসহ কতশত রোমাঞ্চের সাক্ষী বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। টাইগাররা প্রথমবারের মতো ভারতকে হারিয়েছিল এই মাঠেই। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে নাফিসের প্রথম শতকটাও এই মাঠে সেই ভারতেরই বিপক্ষে।

স্মৃতি রোমন্থন করে নাফীস বলেন, 'অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়েছিলাম। এরপর বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগে একটা প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য ডাকা হয়। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ ছিল। তবে ম্যাচ নিয়ে তেমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না যে ভালো করতে হবে। এসেছিলাম, খেলেছিলাম। এ ইনিংসটা যে জীবনে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে বুঝতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রতিটি ইঞ্চি ইতিহাস বহন করে। আমাদের প্রজন্মের সব খেলোয়াড়ই, শুধু ক্রিকেটাররা না, ফুটবলার থেকে সবাই, এ মাঠের কথাই বলবে।'

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ১৯৫৫ থেকে ২০০৫। অর্ধশত বছরে মাঠে গড়িয়েছে ১৭ টেস্ট আর ৫৮ ওয়ানডে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে