দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে পর্দা নেমেছে টি২০ বিশ্বকাপের নবম আসরের। ফাইনালে ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত ছড়িয়েছে উত্তেজনার পারদ। ম্যাচের পরতে পরতে হয়েছে কিছু রেকর্ড। আসর শেষে সেগুলোর দিকে একবার নজর দেওয়া যাক।
ক্লাসেনের ৫ ছক্কা!
টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে রান তাড়ায় নেমে সর্বোচ্চ ৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার হেনরিখ ক্লাসেন। যা বিশ ওভারের বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বিরাট কোহলির দুই ফিফটি
টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে এ নিয়ে দুটি ফিফটি করলেন বিরাট কোহলি। যা যৌথভাবে সর্বোচ্চ। তার সঙ্গে এই তালিকায় আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারলন স্যামুয়েলস ও শ্রীলংকার কুমার সাঙ্গাকারা।
কোহলির সর্বোচ্চ ৭৬
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওপেনিংয়ে নেমে বিরাট কোহলির করা ৭৬ রান টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ওপেনার হিসেবে এরচেয়ে বড় ইনিংস আর করতে পারেননি কেউ।
কুলদীপ ও অক্ষর
টি২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক আসরেই দু'জন বোলারের এক ইনিংসে ৪৪ বা ততোধিক রান দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে এই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন কুলদীপ যাদব ও অক্ষর প্যাটেল। দু'জন হজম করেছেন যথাক্রমে ৪৫ ও ৪৯ রান।
৪৫ রানে মাত্র এক উইকেট!
ফাইনালে ৪৫ রানের বিনিময়ে মাত্র একটি উইকেট পেয়েছেন কুলদীপ যাদব। টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ৪ ওভারের কোটায় এরচেয়ে বেশি রান খরচায় এক উইকেট নেওয়া বোলারদের তালিকায় আছেন শ্রীলংকার লাসিথ মালিঙ্গা (৫৪) ও অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক (৬০)।
৫ম স্থানে অক্ষর প্যাটেল
টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালের ইতিহাসে এক ইনিংসে কমপক্ষে ৪০ ও ১ উইকেট নেওয়া ক্রিকেটারদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন অক্ষর প্যাটেল। তার আগে এই কীর্তি গড়েছেন আরও চারজন।
সর্বোচ্চ ম্যাচসেরা কোহলি
নবম আসরের ফাইনালে ম্যান অব দ্য ম্যাচ জেতার মধ্যে দিয়ে টি২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ম্যাচসেরা হওয়ার রেকর্ড গড়লেন বিরাট কোহলি। তার ম্যাচসেরার পুরস্কার ১৬টি। তিনি ছাড়িয়ে গেছেন সূর্য কুমারকে (১৫)।
অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়া রেকর্ড
বিশ্বকাপের শুরু থেকে ফাইনাল পর্যন্ত কোনো ম্যাচ ভারত হারেনি। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে তারা। একমাত্র দল হিসেবে ভারত এখন পর্যন্ত অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড গড়েছে।
১১ বছর পর
১১ বছর পর ভারত জিতেছে কোনো বৈশ্বিক শিরোপা। সবশেষ ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছিল ভারত। এরপর ২০১৪ সালে টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেললেও শিরোপা পায়নি।
দ্বিতীয়বার টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপা
ভারত দ্বিতীয়বার জিতল টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০০৭ সালে মাহেন্দ্র সিং ধোনির দল পেয়েছিল প্রথম শিরোপা। ১৭ বছর অপেক্ষার পর দ্বিতীয় শিরোপার দেখা পেল রোহিত শর্মার দল।
হার্দিক পান্ডিয়া
বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের হয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। মাত্র ২০ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন হার্দিক।
বোলিং ইকোনমির রেকর্ড
ক্ষুরদার বোলিংয়ে বিশ্বকাপে এক আসরে সেরা বোলিং ইকোনমির রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ। ৪.১৭ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন ডানহাতি পেসার। এর আগে সুনীল নারিন ২০১৪ সালে ৪.৬০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।
ভারতকে ৫০ জয় উপহার
ফাইনাল ম্যাচ জিতে রোহিত শর্মা ফিফটির দেখা পেয়েছেন। এটা অন্যরকম এক ফিফটি। ভারতকে ৫০ ম্যাচ জয় উপহার দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত। এই তালিকার দুইয়ে আছেন পাকিস্তানের বাবর আজম। তার জয় ৪৮টি।
তিনটি দল একটি করে ম্যাচ
টি২০ বিশ্বকাপে এর আগে কেবল তিনটি দল একটি করে ম্যাচ হেরেছিল। ২০০৯ সালে শ্রীলংকা, ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ২০১৪ সালে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা এই তালিকায় লিখাল নাম। ফাইনালের আগে তারা সবকটি ম্যাচে জয় পেয়েছিল। ফাইনাল হেরে সব হারাল তারা।
তিনটি দল দুইবার করে টি২০ বিশ্বকাপ জয়
ক্রিকেট বিশ্বের মাত্র তিনটি দল দুইবার করে টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছে। ভারত আজকের আগে ২০০৭ সালে জিতেছে। ইংল্যান্ড ২০১০ ও ২০২২ সালে জিতেছে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১২ এবং ২০১৬ সালে টি২০'র শিরোপা পেয়েছে।
টুর্নামেন্ট সেরা বুমরাহ
এবার ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ। ৪.১৭ ইকোনমিতে ১৫ উইকেট পেয়েছেন বুমরাহ। বিরাট কোহলির পর ভারতের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টি২০ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার পেলেন বুমরাহ।
ষোলোতম ম্যাচ সেরার পুরস্কার
বিরাট কোহলি ৭৬ রানের ইনিংস খেলে পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। টি২০ ক্রিকেটে এটি তার ষোলোতম ম্যাচ সেরার পুরস্কার। বিরাট পেছনে ফেলেছেন সূর্যকুমার যাদবকে। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ১৫টি ম্যাচে সেরা হয়েছেন।
রান ডিফেন্ড করে ম্যাচ জয়
টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে এ নিয়ে তৃতীয়বার রান ডিফেন্ড করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড হলো। ২০০৭ সালে যোগিন্দর শর্মা শেষ ওভারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল নারিন ১৯তম ওভারে শ্রীলংকাকে হারিয়েছিলেন। ১২ বছর পর ভারত আবার জিতল রান ডিফেন্ড করে। এবার হার্দিক পান্ডিয়া শেষ ওভারে জিততে দেননি দক্ষিণ আফ্রিকাকে।