বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও দেশে ঊর্ধ্বমুখী ভোজ্যতেলের দাম

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

দীর্ঘদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর আন্তর্জাতিক বাজারে কমতে শুরু করেছে ভোজ্যতেল দাম। গত আড়াই মাসে বিশ্ববাজারে প্রতিমণ সয়াবিন ও পাম অয়েলে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কিন্তু দেশীয় বাজারে দাম না কমে উল্টো গত দুই সপ্তাহে প্রতিমণ সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে।

এমনকি, বর্তমানে দেশীয় বাজারে যে দামে ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে, তা ক্রয়মূল্যের চেয়ে প্রতিমণ ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকা পর্যন্ত বেশি।

\হভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় বাজারে দাম বাড়াতে তৎপর হন আমদানিকারকরা। কিন্তু বুকিং দর কমলে দাম কমানোর ক্ষেত্রে সেই তৎপরতা দেখা যায় না আমদানিকারক ও সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে। ফলে দুই-আড়াই মাস ধরে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশীয় বাজারে এখনো ঊর্ধ্বমুখী ভোজ্যতেলের দাম।

\হভোজ্যতেল আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, করোনা ও তৎপরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উৎপাদন ও সরবরাহে চেইনে বিঘ্ন হওয়ায় আড়াই বছর ধরে অস্থির ভোগ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার। এরমধ্যে গত দুই বছর টানা ঊর্ধ্বমুখী ছিল সবচেয়ে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য হিসেবে পরিচিত ভোজ্যতেলের দাম। তবে উৎপাদনকারী দেশগুলোতে উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় গেল ছয় মাস আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কিছুটা কমলেও ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধির কারণে সেই সুবিধা পাননি দেশের ভোক্তারা।

ইনভেস্টিং ডট কমের তথ্যমতে, আন্তর্জাতিক বাজারে গত ১৬ মার্চ পর্যন্ত প্রতিটন অপরিশোধিত পাম অয়েলের বুকিং দর ছিল ৯২০ ডলার। বছরের শুরুতে অর্থাৎ, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পাম অয়েলের বুকিং দর ছিল ৯৬৭ ডলার।

আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৬ মার্চ সয়াবিন তেলের বুকিং দর ছিল ১ হাজার ৪৮১ ডলার, যা জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ১ হাজার ৫৪০, এমনকি ফেব্রম্নয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ১ হাজার ৫৪৮ ডলারে বিক্রি হয়েছে।

অর্থাৎ, গত আড়াই মাসে বিশ্ববাজারে প্রতিটন পাম অয়েলের দাম ৪৭ ডলার ও সয়াবিনে ৬৭ ডলার কমেছে।

এদিকে, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের ধারাবাহিকভাবে দাম কমলেও এর কোনো প্রভাব নেই দেশীয় বাজারে। বরং রমজানকে ঘিরে দেশিয় বাজারে ঊর্ধ্বমুখী ভোজ্যতেলের দাম।

\হভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গত বৃহস্পতিবার প্রতিমণ (৪০ দশমিক ৯০ লিটার) পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার টাকায় ও সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ৮০০ টাকা দামে। অথচ দুই সপ্তাহ আগে, খাতুনগঞ্জে প্রতিমণ পাম অয়েল ৪ হাজার ৭০০ টাকা ও ৬ হাজার ৬০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে।

খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী ও মেসার্স আমান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আমান উলস্নাহসহ আরও অনেক ব্যবসায়ী বলেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কথা বলে গত ছয়মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে মণপ্রতি ১,০০০ টাকা বেশি দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করছেন আমদানিকারকরা। এখন আগেরে চেয়ে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে। সেইসঙ্গে কমেছে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের বুকিং দরও। কিন্তু দেশীয় বাজারে পণ্যটির দাম না কমে উল্টো বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দেন আমদানিকারকরা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে দীর্ঘদিনেও দেশীয় বাজারে পণ্যটির দাম কমে না। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর তদারকি প্রয়োজন বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে