বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষকের কাছে হার মানছে মাঘের শীত, বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত

মো. বাবর আলী, মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
  ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫২
কৃষকের কাছে হার মানছে মাঘের শীত, বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত

পৌষের শেষ দিক থেকে হঠাৎ করেই বেড়েছে ঘনকুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডা বাতাসের দাপট। মাঘের শুরু থেকেও ঘন কুয়াশা ও হাড়কাপানো শীত পরতে শুরু করেছে। অতিরিক্ত ঠান্ডায় জনজীবনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সকালে দেরি করে খুলছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আবার সন্ধ্যা পরপরই অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হওয়ায় চারপাশ হয়ে যাচ্ছে জন মানবহীন। কিন্তু যারা মাঠে সোনা ফলাবে তাদের স্থবিরতা নেই। মাঘের হাড়কাপানো শীত যে তাদের শরীরে লাগছে না। ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত কৃষকেরা কাঁদা মাঠে নেমে ধান রোপন করে চলেছে।

কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, এ বছর বোর আবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ২১৮৫০ হেক্টর জমি। যা থেকে ৯৪১৩১ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে ধারণা করছেন কৃষি অফিস। গত বছর লক্ষমাত্রা ছিলো ২১৭৫০ হেক্টর জমি। ধান উৎপাদন হয়েছিলো ৯৫৭৭৯ মেট্রিকটন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর বোর ধানের আবাদ ও ধান উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা কৃষি অফিসের।

হাড়কাপা শীত আর ঘন কুয়াশাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাকডাকা ভোরে উঠে কাদাঁ মাঠে নেমেছেন গ্রামবাংলার কৃষকরা। শীত সবসময় তাদের কাছেই যেন হারমানে। মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউপির ডুমুরতলা মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, ভোরবেলায় প্রচন্ড শীত ও কুয়াশার মধ্যেও কৃষকেরা দলবেঁধে মাঠে বোরো ধানের চারা লাগাচ্ছে। কৃষক লুৎফর মোল্লা বলেন, শীতের ভয়ে বসে থাকলে চলবে, চলবে কি করে। আমরা এসময়ে বসে থাকলে আমাদের পরিবার ও দেশের মানুষদের পেটে ভাত জুটবে কি ভাবে। অন্য এক কৃষক মনির উদ্দীন বলেন, আমরা বসে থাকলে সমস্যা শুধু আমাদের হবে না গোটা দেশের সমস্যা হবে। মাঠের পর মাঠ ফসল না লাগালে মানুষ খাবে কি?

বেলা ১২টা মহেশপুর হুদোড় মোড় এলাকায় মাথায় বোরো ধানের চারা নিয়ে মাঠের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন আমির ও তরিকুল নামের দুই কৃষক। তারা বলেন পৌষের শেষ দিক থেকে শীত ও কুয়াশা পরা শুরু হয়ে গেছে বিকেল থেকেই কুয়াশা শুরু হয়। রাতেও টিনের চালে টুপটাপ শব্দে বৃষ্টির মতো ঝড়ে কুয়াশা। সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে গেলেও কুয়াশাচ্ছন্ন থেকে যায় চারপাশ। তবে কুয়াশা বা শীত আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন না হলে ক’দিন পরেই মাঠের পর মাঠ হয়ে যাবে সবুজ ধান ক্ষেত। আর তারপরেই সোনার ফসলে শুরু হবে হাসির ঝিলিক।

মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান যায়যায়দিনকে বলেন, বোর আবাদে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সুসম সার ব্যবহার,প্যচিং পদ্ধতি ও লাইন করে ধান লাগালে বোর ধানের ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর বোর ধানের আবাদ ওধান উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে ।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে