নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নে পাহাড় কাটা চলছেই। উপজেলার কয়েকটি স্থানে পাহাড় কাটা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে পাহাড়ের মাটি কেটে সড়কের মাটি ভরাটের নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে ঘিলাছড়ি ওয়ার্ডের সমাজকল্যান এলাকায় থেকে ১৭ মাইল এলাকা পর্যন্ত পাহাড় কেটে রাস্তার ওয়ালের মাটি ভরাট করা হয়েছে ।
কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতৃর্ক সরকারী বা আধা-সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন ও/বা মোচন করে তবে শর্ত থাকে যে, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে কোন পাহাড় বা টিলা কর্তন বা মোচন করা যাইতে পারে। ১.ধারা ৬খ বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৫০ নং আইন) এর ৪ ধারাবলে সংযোজিত।
এভাবে ঝুঁকিপূর্ণভাবে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি দেওয়া হচ্ছে রাস্তার ওয়ালের।এক শ্রেণি অসাধু ব্যক্তিরা গভীর রাতের আধারে অপরুপ সৌন্দর্য পাহাড়গুলোকে কেটে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এতে সুশীল সমাজ বলছেন,পাহাড়ের সৌন্দর্য আর প্রাণীকূলের আশ্রয়স্থল ধ্বংস হচ্ছে। ভবিষ্যতে পাহাড় ধ্বস বা পরিবেশ বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার বুড়িঘাট আংশিক ও ঘিলাছড়ি ইউনিয়নে পাহাড় কাটার ফলে ভবিষ্যতে ঘন বর্ষায় বাড়তে পারে পাহাড় ধসের মত ঘটনা বা প্রাণহানি । একটি সুত্রে বলছে বিগত ২০১৭ সালে রাঙ্গামাটি জেলা সহ বিভিন্ন উপজেলার পাহাড় ধসের ঘটনায় ১৫০ এর বেশি লোক মারা যায়।
কিন্তু নানিয়ারচর উপজেলায় দিনের পর দিন পাহাড় কাটা হচ্ছে, নির্বচারে পাহাড় কাটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্থানীয়রা।
রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, নানিয়ারচর ঘিলাছড়িতে পাহাড় কাটাকে সড়ক বিভাগ উৎসাহ প্রদান করে না, এসব পাহাড় কাটাকে আমরা নিরুৎসাহিত করি।
এই বিষয়ে নির্মানকারি প্রতিষ্টান সেলিম এন্ড ব্রাদার্সের সত্বাধিকার মো: সেলিমের মুঠোফোনে কথা বলে জানা গেছে পাহাড় কাটার সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠান জড়িত নন। কে বা কারা করছে তিনি জানেন না।
নানিয়ারচরে একটি সিন্ডিকেট পাহাড় কাটায় বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দিন দিন নির্বিচারে রাতের আধারে পাহাড় কাটতে দেখা যাচ্ছে।ফলে পরিবেশের প্রতি মানুষের বিরূপ আচরণ, এতে এসব এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন ও বাসযোগ্য অযোগ্য হবে।
স্থানীয়রা বলেন, পাহাড় যারা এভাবে কাটছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। কঠোর ভাবে জরিমানা করতে হবে, তবেই পাহাড় নিধন বন্ধ হবে।
এই বিষয়ে ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অমল কান্তি চাকমা জানান,রাষ্ট্রীয় সার্থে মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রম পাহাড় কাটার অনুমতি গ্রহনপূর্বক কাটতে পারবে,কিন্তু আমার ঘিলাছড়িতে পাহাড় কাটার বিষয়ে কেউ অবগত নন,এই বিষয়ে সরকারকে অবশ্যই শক্ত হাতে দমন করার জন্য অনুরোধ করছি।
নির্বিচারে পাহাড় কাটার বিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদক অবগত করেছেন, তিনি জানিয়েছেন,পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাহাড় কেটে ধ্বংস করা হয়েছে বনভূমি,যার ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা ঝুঁকির মুখে পড়ছেন।
যাযাদি/ এম