শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
পৌরসভা ও সড়ক বিভাগের রশি টানাটানি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে জ্বলছে না উড়াল সেতুর বাতি, অপরাধ প্রবনতা বাড়ার আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  ২০ মার্চ ২০২৪, ১১:২২
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে জ্বলছে না উড়াল সেতুর বাতি, অপরাধ প্রবনতা বাড়ার আশঙ্কা

পৌরসভা ও সড়ক বিভাগের রশি টানাটানির কারনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতের বেলা জ্বলে না শহরের উড়াল সেতুর বাতিগুলো। বেশ কয়েকদিন ধরে রাতের বেলা উড়াল সেতুর বাতি না জ্বলার কারণে রাতের আঁধারে এই সেতুর উপর দিয়ে পথচারীদের চলাচল অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।এছাড়া আলোর স্বল্পতার কারণে যে কোনো সময় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। এ ছাড়াও পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে উড়াল সেতুতে ছিনতাইকারীদের হামলার আশংঙ্কা করছেন শহরবাসী।

এদিকে সড়কবাতি জ্বালানোর দায়িত্ব নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে পৌরসভার রশি টানাটানি চলছে। তবে পুলিশ বলছে জনস্বার্থ বিবেচনা করে কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের যানজট নিরসনের জন্য ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল খ্রিস্টীয় মিশন এলাকা থেকে টি.এ. রোডের আশিক প্লাজা পর্যন্ত ৭৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৬ মিটার প্রস্থ রেলওয়ে ওভারপাস নির্মান কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রায় ৭৯ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ওভারপাসটি ২০১৮ সালের ১লা নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন।

এর পর থেকেই উড়াল সেতুটি যান চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। এতে করে শহরবাসীর যানজটের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসে।

এদিকে উড়াল সেতুটি চালুর পর গত ৭ বছর ধরে স্বাভাবিক ভাবেই এর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি এই উড়াল সেতুর উপরে থাকা অন্তত অর্ধশতাধিক সড়ক বাতি জ্বলছে না। ফলে পথচারীদের চলাচলে অনেকটাই সমস্যা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা নাগরিক ফোরামের সহ-সভাপতি নিহার রঞ্জন সরকার জানান, শহরের গুরুত্বপূর্ন এই উড়াল সেতুতে দীর্ঘদিন ধরে সড়কবাতি গুলো জ্বলছে না। যার কারণে রাতের বেলা সেতুর উপর অপরাধ প্রবণতা বাড়বে। তিনি অবিলম্বে রাতের বেলা উড়াল সেতুর বাতিগুলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, ফ্লাইওভারটি পৌরসভার ভেতরে হওয়ায় আমরা এটি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। তারা ও নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমাদের পক্ষে এ বাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলও আমাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ মন্ত্রণালয় থেকে তেমন কোনো বরাদ্ধ আসছে না।

এ ব্যাপারে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কাজী জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে দেয়া চিঠি আমরা গ্রহণ করিনি। আমাদের পর্যাপ্ত এবং প্রয়োজনীয় লোকবল এবং যন্ত্রপাতি নেই। বিষয়টি আমরা সড়ক বিভাগকে জানিয়ে দিয়েছি। এছাড়া সড়ক বাতি মেরামতের জন্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই এই পৌরসভার।

তিনি বলেন, বাতির প্রতিটি পিলারের উচ্চতা ৩০ফুট। আমাদের কাছে মই আছে ২৫ ফুটের। এছাড়া প্রতিটি বাতি রক্ষণাবেক্ষণ করতে গেলে খরচ হয় চার থেকে পাঁচশত টাকা। পৌরসভার পক্ষে এই ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দায়িত্ব এখনো সড়ক বিভাগের হাতেই রয়েছে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন জানান, ঝুঁকি বিবেচনায় আপাতত উড়াল সেতু এলাকায় পুলিশী নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে